আজ বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আখি আলমগীর ও বাঙালীর বিকৃত যৌনচিন্তা

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ণ
আখি আলমগীর ও বাঙালীর বিকৃত যৌনচিন্তা

Sharing is caring!

মিকাইল ইমরোজ

ঘটনাটি বেশ পুরোনো, তবে বিকৃতমনা বাঙালী এটা ভেবে এখনো উত্তেজিত বোধ করে। বাঙালী পুরুষেরা প্রতিনিয়তই এই ধরনের বিকৃত যৌনচিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। সেজন্য এটা আমাদের জন্য বিশেষ ঘটনা নয়। তবে আমাদের সমাজে সাহসী লোকের অভাব, অনেক দেরিতে হলেও আমাদের এক সূর্য্য সন্তান অতি গোপন ইচ্ছাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। আখি আলমগীরের প্রতি বিশেষ ব্যাক্তিটির ব্যাক্তিগত আক্রোশ থাকতে পারে কিংবা তার গান ভালো লাগে না সেই ভাবনা থেকে হয়ত আক্রমনটা হয়েছে কিন্তু প্রশ্ন হলো অন্য কোন ভাবে কি আক্রমন করা যেত না? প্রশ্ন থাকতে পারে গান ভালো না লাগলে আক্রমন কেন? উত্তর হলো কোন কারনে সমালোচনা করতে হয় আর কোন কারনে আক্রমন করতে হয় সেই বোধটা আমরা অর্জন করতে পারিনি। যাই হোক আক্রমনের কথায় আসি। বাঙালী চরম প্রতিশোধ কিংবা আক্রমন বলতে শুধু মাত্র খুন ও ধর্ষনকে বুঝে। এর বাহিরে আক্রমনের কথা বাঙালীর চিন্তার অতীত। কোন নারীকে আক্রমনের ক্ষেত্রে লৈঙ্গিক দুর্বলতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করা বাংলাদেশের প্রাচিন রীতি।

একজন বাঙালীর বিকৃত কর্মের দায় কেন পুরো জাতি বহন করবে? একটা কর্মকে নিরবে উৎসাহিত করার অর্থ হল উৎসাহপ্রদানকারীও একই চিন্তার মানুষ। এখন বিষয় হল আপামর বাঙালী আখি আলমগীর প্রশ্নে কি ভুমিকা গ্রহন করেছে? কোন অপরাধকে উৎসাহিত ও নিরব সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে তবে এবং কিন্তু শব্দ দুটি সবচেয়ে ফলপ্রসু। এই অবধি এই বিষয়ে যত বক্তব্যই আমি শুনেছি সব কথাতে এই শব্দদ্বয় ব্যাবহার করে বক্তাগন বিকৃত ব্যাক্তির ন্যায় সমান বিকৃত যৌনানন্দ লাভের চেষ্টা করেছেন। যেন এহেন মহৎ কর্মটি বাঙালীর অকৃত্রিম বিনোদনের উৎস হয়ে দাড়িয়েছে। আক্রান্তের ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করাও অপরাধকে সমর্থনের নামান্তর। এক্ষেত্রে আখি আলমগীরের চরিত্র নিয়ে অনেক কথা উঠেছে। মেনে নিলাম তিনি এ যাবত কালের শ্রেষ্ট চরিত্রহীনা, কিন্তু যারা তার চরিত্র নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছে তারা কি অদৌ আখি আলমগীরে ব্যাক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানে? তার চরিত্র নিয়ে এই ভাবনাটাও কি আমার বিকৃত চিন্তার ফসল নয়? নিরব সমর্থনকারীদের এবং ইচ্ছা পোষনকারীর মধ্য একমাত্র পার্থক্য, সেটা হলো সমর্থনকারীরা ভিতু তাদের মনের কথা প্রকাশের সাহস নেই কিংবা সামাজিক সন্মানের ভয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করেছে। যে জাতির অধিকাংশ এই ধরনের চিন্তা বহন করে সেই জাতিটির যৌনচিন্তা কি সুস্থ?

চারদেয়ালে বন্দি শহুরে নতুন প্রজন্মের অধিকাংশ পর্নগ্রাফীতে আসক্ত। এসব বিষয় আমাদের চিন্তিত করে না। কিন্তু ছেলেমেয়ে এক সাথে মিশতে দেখলে আমরা ভাবি এই বুঝি দেশ রসাতলে গেল। আসল সমস্যা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই কিংবা চিন্তা করার সক্ষমতা লাভ করতে পারিনি। বাঙালী প্রকাশ্যে আলোচনায় সুস্থ যৌন জীবন নিয়ে আলোচনা করাকে পাপ মনে করে। অন্যথায় বন্ধুদের একান্ত আড্ডায় বাঙালীর প্রিয় বিষয় হলো বিকৃত যৌনরসাত্মক গল্প। হস্তমৌথুন করে না এমন পুরুষ হয় না, বাঙালী পুরুষরাও তার ব্যাতিক্রম নয় কিন্তু খুনের দায় শিকার করলেও কোন বাঙালী এই অভ্যাসের কথা শিকার করে না। বাঙালী যৌনজীবনে সূখী নয়, অধিকাংশের যৌনজীবন নেই বললেও চলে। তাই প্রত্যেক বাঙালীর যৌনচাহিদা আজন্ম অপূর্ন থাকে। এর বিরুপ প্রভাব পড়ে বাঙালীর চিন্তায়। বাঙালী যৌনতা বলতে ভোগ করাকে বুঝে, উপভোগ শব্দটি বাঙালীর কাছে এখনো পৌছায় নি। বাঙালীর যৌনচেতনা বুভুক্ষ বোধহীন প্রানীর মত কিন্তু প্রকাশের সময় সবাই নিষ্কাম মহাপুরুষ।