Sharing is caring!
টাইমস নিউজ
আবার চলচ্চিত্রে ফিরে আসতে চান চিত্রনায়িকা রুমানা ইসলাম মুক্তি । তিনি রেডটাইমসকে জানান, একটি বিশেষ কারণে চলচ্চিত্রের ভুবন থেকে তাকে সরে যেতে হয়েছিল । সেই সময়টা কেটে গেছে । ভালো কাজ পেলে আবার তিনি ফিরে আসবেন ।
আজ ১লা ডিসেম্বর বাংলা চলচিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারার একমাত্র মেয়ে মুক্তির জন্মদিন। আজকের এই দিনে তিনি ঢাকার ইস্কাটনে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা মুহিতুল ইসলাম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
১৯৯২ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী থাকাকালীন মুক্তির চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।
চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মানদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রে কপিলার (চম্পার) মেয়ে গোপী চরিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে মুক্তির বড় পর্দায় আগমন। ১৯৯৩ সালে ছবিটি মুক্তির আগেই ১৯৯২ সালে তার দ্বিতীয় ছবি শেখ নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘চাঁদের আলো’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। এটি মুক্তি পাওয়ার পর বেশ আলোচনায় চলে আসেন তিনি। মাত্র ১২ বছর বয়সে চিত্রনায়ক ওমর সানীর নায়িকা হিসেবে ‘চাঁদের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তিনি।
ওই সিনেমায় ‘তুমি আমার চাঁদ, আমি চাঁদেরই আলো’ এবং ‘প্রেমের নামে মিথ্যে বলোনা’ গানগুলো সেই সময় থেকে এখনো মানুষের মুখে মুখে।
এরপর ফজলে হক পরিচালিত ‘লড়াই’, প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ুন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, চাষী নজরুল ইসলামের ‘হাছন রাজা’, রায়হান মুজিবের ‘জগৎ সংসার’, ‘দারোয়ানের ছেলে’, ‘তুমি আমার স্বামী’, এফ আই মানিকের ‘পিতা মাতার আমানত’ সহ বেশকিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি বেশ প্রশংসিত হন।
বর্তমানে মা আনোয়ারা এবং একমাত্র মেয়ে কারিমা ইসলাম দরদীকে নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন মুক্তি । চলচ্চিত্রে অভিনয়ে না থাকলেও হাল সময়ে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা মিলছে তার।
এবার কি অভিনয়ে নিয়মিত হবেন মুক্তি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেখুন, ‘আমি কিন্তু কখনোই অভিনয়ে নিয়মিত ছিলাম না। আমার কাজের সংখ্যাটাও কম। অনেক কাজ করতে হবে এমন কোনো ইচ্ছা ছিল না। তবে সামনে হয়তো আমাকে কয়েকটি সিনেমায় দেখবেন দর্শক। একটি সিনেমার শুটিং করার কথা ছিল।
এখন সেই সিনেমার শুটিং চলছে। কিন্তু আমি শিডিউল মেলাতে পারিনি। ইচ্ছা আছে ভালো গল্প ও চরিত্র পেলে কাজ করার। কারণ এখনো দর্শকদের সঙ্গে দেখা হলে অনেকেই বলেন, আপনার ওই সিনেমাটা খুব ভালো ছিল। কেউ কেউ আমার সিনেমায় চরিত্রটিও দেখি মনে রেখেছেন। এটি দেখে মনে হয় আসলে আরও বেশি কাজ করা উচিত ছিল। দর্শকের এ ভালোবাসার কোনো মূল্য হয় না। তাদের এ ভালোবাসা প্রতিদান দিতে পারব না।’
সিনেমা প্রসঙ্গে মুক্তি বলেন, “সিনেমার প্রস্তাব তো অনেক পাচ্ছি। ভালো সিনেমা হলে করব। তবে আমি আগেই বলেছি, আমি বাণিজ্যিক ঘরানায় যেতে চাচ্ছি না। যদি অফট্র্যাকে ছবি হয়, ভালো ছবি হয়, তাহলে করব। কিন্তু আমি কমার্শিয়ালে যাব না। আমি আসলে বাণিজ্যিক সিনেমার জন্য উপযুক্ত নই। খোলামেলা পোশাক পরতে হয়। যেটা প্রয়োজন। আমি বেশির ভাগই করেছি অফট্র্যাক টাইপের ছবি। যেমন “পদ্মা নদীর মাঝি”। এটাতে শিশুশিল্পী হিসেবে আমি অভিনয় করেছিলাম। এরপর “চাঁদের আলো” করলাম। এরপর হুমায়ুন আহমেদের “শ্রাবণ মেঘের দিন”। তারপর করলাম “হাছন রাজা”। এ ধরনের সামাজিক কাহিনী নির্ভর ছবিগুলোই আমার ভালো লাগে।”
চলচ্চিত্র থেকে সরে যাওয়ার কারণও বলেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। মুক্তি বলেন, ‘সরে আসার কারণ হচ্ছে, আমার বাবা স্ট্রোক করেন। তাঁকে দেখার লোক ছিল না। আমার ভাইবোন ছিল না। এমন রোগীদের অনেক সময় দিতে হয়। আব্বা পাঁচ বছর বিছানায় ছিলেন। এরপর যখন মারা গেলেন, তখন আমার মাও স্ট্রোক করলেন। তখন মাকে দেখাশোনা করতে হয়েছে। মা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েছেন। সে জন্য বলছি, ভালো ছবি হলে করব।’