Sharing is caring!
টাইমস নিউজ
সমাজ চিন্তক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, রাজনীতি বাদ দিয়ে বেশি দিন চললে আমাদের সার্বভৌমত্ব থাকবে না।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ‘বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। সভার আয়োজন করে সমাজ সন্দর্শন কেন্দ্র। সভায় আরও বক্তৃতা করেন সমাজ-সন্দর্শন কেন্দ্রের সভাপতি মুস্তাফা মজিদ, অধ্যাপক ড. রাহমান চৌধুরী, ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান প্রমুখ।
আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কিছু পরিকল্পনা করেছে, সেগুলো সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করলে আমাদের জাতির জন্য ভালো হবে। কিন্তু রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব বাদ দিয়ে বেশি দিন চললে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে না। কারণ যে বড় বড় শক্তি আছে, তারা রাজনৈতিক ছাড়া রাজনীতি পরিচালনা করতে পারবে না। জনগণের যদি সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে সরকারের শক্তি বাড়বে। যেহেতু আগে দুইটা দল নানান রকম অনুচিত কর্মকাণ্ড করে রাজনীতির প্রতি জনসাধারণের বিরূপ মনোভাব তৈরি করেছে।
এই সমাজ চিন্তক বলেন, আমরা এখন ভীষণ দুর্যোগের মধ্যে পড়ে আছি। এই দুর্যোগ আগে থেকে হয়ে আসছে। শেখ হাসিনার আমলে এটা একটা ক্লাইম্যাক্সে (চূড়ান্ত রূপে) পৌঁছেছে। একটানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে আবার একটা নির্বাচনের নামে প্রহসন করে বিজয় হয়েছে। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়েই বিএনপিসহ বিরোধী দলের ওপর সীমাহীন অত্যাচার চালিয়েছে। হাইকোর্ট-সুপ্রিমকোর্টকে মর্যাদাহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। একেবারে শেখ হাসিনার সঙ্গে যাদের যাদের পরিচয় আছে, তাদের বিচারপতি করেছেন। রাজনৈতিক অনেক বিষয়ে শেখ হাসিনা যা চেয়েছেন, বিচারপতি তেমন রায় দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা শাসনকে হিটলার ও মুসোলিনির শাসনের সঙ্গে তুলনা করে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, শেখ হাসিনার শাসনকে সবাই ফ্যাসিবাদী বলছেন। ফ্যাসিবাদের প্রবক্তা মুসোলিনি। ফ্যাসিবাদের মুসোলিনির ধারণা পরে হিটলার গ্রহণ করেছে। মুসোলিনির যেই অবস্থা হয়েছে, হিটলারেও একই অবস্থা হয়েছে। মুসোলিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, অসাধারণ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। কিন্তু পৃথিবীব্যাপী কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ইতালির জনগণের হাতে করুণভাবে মরতে হয়েছে। পরে জার্মানে হিটলার একই মতবাদ গ্রহণ করেছেন। সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রচার দিয়ে তারা জনপ্রিয় হয়েছেন। একনায়কতন্ত্রের কারণে মুসোলিনি ও হিটলারের বিরুদ্ধে বেশি জনমত তৈরি হয়েছিল। শেখ হাসিনা হিটলার ও মুসোলিনির তুলনায় সামান্য ব্যাপ্তি, অসামান্য কিছু না। তারপরও শেখ হাসিনা নিজের বাবার কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে নিজের অবস্থানকে স্থায়ী করার চেষ্টা করেছেন।