আজ শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষের সঙ্গে এমন করেনি’: শেখ হাসিনা

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ৯, ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
‘আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষের সঙ্গে এমন করেনি’: শেখ হাসিনা

Sharing is caring!

টাইমস নিউজ

ফেসবুক ও ইউটিউবে আবারও লাইভে এসে কথা বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এসময় তিনি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করিনি।’

সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত ৯টায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পরিবার-পরিজনদের নিয়ে নিয়মিত আয়োজিত ‘দায়মুক্তি’র বিশেষ পর্বে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকেই বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অডিওতে বিভিন্ন বার্তা প্রচার করতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকেও বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবারের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা দাবি করেন, ‘দেশটাকে চেয়েছিলাম সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার পর দেশ গঠন করেছিলেন। একটাই লক্ষ্য— দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমি তো সেই কাজটাই করে ফেলেছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘আমি ৮১ সালে দেশে আসার পর সারা বাংলাদেশ ঘুরেছি, দেখেছি সমস্যা কোথায়। ৯৬-তে নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করি। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করি। সাধারণ মানুষের আয়-রোজগার ছিল। অন্তত খাবারের অভাব ছিল না। চিকিৎসা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। একটা দেশকে যতটুকু উন্নয়ন করতে হয়, অসাধ্যকে সাধন করেছিলাম আমি। মানুষের ভেতরে স্বস্তি, আনন্দ ছিল।’

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আর সেই সময় মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হলো। যত গুণ্ডাপাণ্ডা, সন্ত্রাসী, জঙ্গি— ছাত্রদের পয়সা দিয়ে কিনে, তাদের দিয়ে যে অঘটন ঘটালো!’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। কীভাবে হত্যা করেছে, কী বীভৎস! যার ভেতরে মনুষ্যত্ব থাকে, সে এটা করতে পারে না। একটা মায়ের বয়সী নারীকে পর্যন্ত কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এরা মানুষের জাত না। অথচ বাংলাদেশে সেটা করে যাচ্ছে। আবার বিচার চাওয়া যাবে না—ইনডেমনিটি দিয়েছে।’

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘এই ইনডেমনিটি দিয়ে কোনও দিন বাঁচতে পারবে না। খুনের মামলা কখনও তামাদি হয় না। আমার তো ৩৫ বছর লেগেছিল আমার বাবা-মা, ভাইদের হত্যার বিচার করতে। আর আমি যখন আছি, এত সময় লাগবে না। আমার বিশ্বাস, আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এই কারণেই— এই অন্যায়গুলো করেছে যারা, তাদের প্রত্যেকের নাম ধরে ধরে, চেহারা দেখে দেখে শাস্তি দেওয়া হবে। এই দেশে শাস্তি আমরা দেবোই—এটা আমার প্রতিজ্ঞা।’

আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষের সঙ্গে কখনও এমন ব্যবহার করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন… একেকটা পরিবারকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অথচ অপরাধ ছিল কী? আমরা আমাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করিনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই পাকিস্তানের বুটের লাথি খেতো। খাবার দিতো না, কিছুই দিতো না— সেটা ভালো ছিল। জাতির পিতা চেয়েছিলেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। আমরা সেটা করেছিলাম। কিন্তু সেই হাসিটা কেড়ে নিয়ে গেলো।এর বিচার একদিন হবেই হবে।’