আজ সোমবার, ১০ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলে নকল মসলা, আসল বিপদ! ঝুঁকিতে হাজারো ভোক্তা

editor
প্রকাশিত মার্চ ৯, ২০২৫, ০৫:৩২ অপরাহ্ণ
শ্রীমঙ্গলে নকল মসলা, আসল বিপদ! ঝুঁকিতে হাজারো ভোক্তা

Sharing is caring!

তাপস দাশ শ্রীমঙ্গল:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল বাজারে মসলার আড়ালে ভয়াবহ প্রতারণা চলছে। হলুদ, মরিচ ও ধনিয়া গুঁড়ার মধ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক ও অপ্রাকৃত উপাদান মেশানো হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার (৮ মার্চ) স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ভেজাল মসলার বাজারজাতকরণের তথ্য পাওয়া যায়। তাদের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীরা মসলার নামে ধানের তুষ, মুরগির ফিড, ইটের গুঁড়া, বিষাক্ত রং ও ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশিয়ে বাজারজাত করছে। বিশেষ করে রমজান মাস ঘনিয়ে আসায় এই ভেজাল চক্র আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা দোকানে এসব মসলা অবাধে বিক্রি হচ্ছে, যা সাধারণ ভোক্তাদের জন্য এক অদৃশ্য বিপদ ডেকে আনছে।
এক ভুক্তভোগী ক্রেতা, আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “ভালো-মন্দ বোঝার সুযোগ নেই, বাধ্য হয়ে যা পাওয়া যায় তাই কিনছি। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
অপর এক ক্রেতা দ্বীপ বোনার্জি বলেন, “নকল ও আসল মসলার মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিল, তাই প্রতারিত হচ্ছি প্রতিদিন।”
অন্যদিকে, মিল মালিকরা সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলছেন, তারা কোনো ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করেন না। তবে বাজারজাতকরণের অনুমোদন সংক্রান্ত প্রশ্নের সঠিক জবাব তারা দিতে পারেননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসমিন সতর্ক করে বলেন, “ভেজাল মসলা পাকস্থলীর জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। এটি গ্যাস্ট্রিক, আলসার, কিডনির সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।”
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন জানান, “আগেও বেশ কয়েকবার ভেজালবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। আবারও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, “এ বিষয়টি আমার অজানা ছিলো। এমন ধরনের অনিয়ম সম্পর্কে এখনই তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, ক্রেতারা আশায় রয়েছেন, দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ভেজালের এই ভয়াল ছায়া দূর হবে, আর তাদের খাবারে ফিরে আসবে বিশুদ্ধতার স্বাদ।