আজ রবিবার, ১৩ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জঙ্গিবাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স : মাহফুজ আলম

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ১১, ২০২৫, ০৩:৪৩ অপরাহ্ণ
জঙ্গিবাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স : মাহফুজ আলম

Sharing is caring!

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলছে, বাংলাদেশে কোনো উগ্রবাদ ও জঙ্গি তৎপরতা প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

মার্চ ফর খিলাফত কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান, মাজার ভাঙার সঙ্গে জড়িত, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা এবং সবশেষ বাটা হামলা ভাঙচুরে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

জঙ্গি মামলায় জামিন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু লোক ওই পথ পরিহার করেছে। জসীম উদ্দিন রাহমানী তো বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে সে আর এই পথে হাঁটতে চাচ্ছে না। যারা ছাড়া পেয়েছে প্রত্যেকে নজরদারিতে আছে। তাদের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা এবং রাষ্ট্র খুবই স্পর্শকাতর। তারা যেকোনো কিছু করলেই সরকার ব্যবস্থা নেবে। আমরা চাচ্ছি যে বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। কিন্তু আমরা তাদেরকে নজরদারিতে রাখছি।’

মাহফুজ আলম বলেন, ‘জঙ্গিবাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স।সরকার কঠোর হবে, নজরদারিতে আছে ওরা কোনো ধরনের উসকানি বা কোনো ধরনের উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড হলে সরকার গ্রেফতার করবে। যারা রাষ্ট্রের জন্য থ্রেট তাদেরকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে, তাদের যেকোনো কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রবিরোধী হলে তৎক্ষণাৎ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা হচ্ছে পজিশন।’

গত বছরের ৫ আগস্টে দেশে পটপরিবর্তনের পর জঙ্গিবাদের বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত শত শত ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কারা কর্তৃপক্ষের হিসাবে এখন পর্যন্ত এই সংখ্যা তিন শতাধিক।

জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে সন্দেহভাজন, বিচারাধীন, এমনকি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিও রয়েছেন।বিশ্লেষকরা বলছেন- জামিনে মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে বিগত সরকারের আমলে জঙ্গি তকমা দিয়ে আটক নিরাপরাধ ব্যক্তিরা যেমন আছেন, তেমনি বিভিন্ন জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িতরাও এ সময়টিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন।

জঙ্গি মামলায় অভিযুক্ত কতজন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এ বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, সংখ্যাটি তিনশর অধিক।তিনি বলেন, ‘তিনশ প্লাস বন্দি মুক্তি পেয়েছেন, যাদের অনেকে বিভিন্ন জঙ্গি সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে হয়তোবা যুক্ত ছিল। সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন এবং যারা হিনিয়াস ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত অথবা সরাসরি বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের ব্যাপারে কিন্তু সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই কিন্তু আবার র‍ি-অ্যারেস্টও (পুনরায় গ্রেফতার) হয়েছে।’

এদিকে অনেকের দৃষ্টিতে বাংলাদেশে ৫ আগস্ট পরবর্তী বেশ কিছু ঘটনায় উগ্রবাদী তৎপরতা দৃশ্যমান হয়েছে। খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে মার্চ ফর খিলাফত কর্মসূচি পালন করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীর। গত আট মাসে মাজার ভাঙা, নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিভিন্ন জায়গায় মব তৈরি এবং সবশেষ ফিলিস্তিনের সমর্থনে কর্মসূচির দিনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট খারাপ নজির সৃষ্টি করেছে।

গত আট মাসে তিন শতাধিক জামিনে মুক্তির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এদের অনেকে আবার আটক হয়েছে। তবে পুনরায় গ্রেফতার কতজন সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তথ্য রয়েছে বলে মাহফুজ আলম জানান। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া জেল থেকে পলাতক বন্দি এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে দাবি করছে সরকার। কিন্তু এ ব্যাপারে পুলিশপ্রধান এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।সূত্র: বিবিসি বাংলা