টাইমস নিউজ
চলতি অর্থবছরের শেষার্ধের অর্থাৎ জানুয়ারি-জুন মেয়াদের মুদ্রানীতি সোমবার ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদের হার আর বাড়ানো হবে না। বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়ানোর প্রবৃদ্ধিতেও লাগাম টানা হবে না। আগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হবে।
মুদ্রানীতিতে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসাবে তিনটি বিষয়কে রাখা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে– মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা, ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারকে স্থিতিশীল রাখা ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়ে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি অর্থবছরে দুই দফায় মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। অর্থবছরের প্রথম দফায় করে জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে, দ্বিতীয় দফায় করে জানুয়ারি-জুন মেয়াদে। এবার দ্বিতীয় দফার মুদ্রানীতি ঘোষণা করছে। আজ সোমবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ নীতি ঘোষণা করবেন।
এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার ও টাকার প্রবাহ বড়ানোর প্রবৃদ্ধি কেমন হবে সে বিষয়ে একটি কৌশল প্রকাশ। এর মাধ্যমে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি এখনো নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। আগে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমলেও এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে।
এবারের মুদ্রানীতিতে আইএমএফের অনেক পরামর্শ থেকে বেরিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগেও আইএমএফের বেশ কিছু পরামর্শ বাস্তবায়ন করা হয়নি। আইএমএফ মূল্যস্ফীতি না কমা পর্যন্ত মুদ্রানীতিকে আরও কঠোর করার পরামর্শ দিয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতিকে কঠোর করছে না। আবার শিথিলও করছে না। আগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে। নীতি সুদের হার আর বাড়ানো হবে না। এর আগে এ সরকার ক্ষমতায় এসে তিন দফায় নীতি সুদের হার বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করেছে। এর সঙ্গে অন্যান্য নীতি সুদের হারও বাড়ানো হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর খরচ বেড়েছে। এতে ব্যাংকগুলোও ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আগামীতে ছাপানো টাকা ও টাকার অবমূল্যায়নজনিত কোনো চাপ যাতে মূল্যস্ফীতির ওপর না পড়ে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হবে। বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো হাত নেই। এখানে সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে বলে মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কারণ বাজারে সব পণ্যের সরবরাহ ও আমদানি স্বাভাবিক থাকার পরও কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে মূল্যস্ফীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে।
ডলারের প্রবাহ বাড়ায় রিজার্ভও বাড়তে শুরু করেছে। বকেয়া বৈদেশিক ঋণ, নিয়মিত ঋণ ও নিয়মিত আমদানি দায় শোধের পরও রিজার্ভ এখন বাড়ছে। বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ২০ কোটি ডলার। আগামীতে রিজার্ভ আরও বাড়বে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে বিনিয়োগও বাড়বে। এজন্য ঋণের সুদের হার বাড়ানো হচ্ছে না। ব্যাংকে বর্তমানে তারল্য সংকট বেশ কিছুটা কমেছে। ফলে উদ্যোক্তারা আগামীতে ঋণের জোগান পাবেন।
এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির হার কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জুনের মধ্যে এ হার ৭ থেকে ৮ শতাংশে নামানো সম্ভব হবে। বর্তমানে এ হার কমে ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। জুলাইয়ে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে ওঠেছিল। তবে বৈশ্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন এর প্রভাব আসতে পারে দেশেও।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.