টাইমস নিউজ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর মনিটরিং এবং হুন্ডি প্রতিরোধে জোর তৎপরতার ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর প্রভাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের উর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার (৬ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলারে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় ইতিবাচক ধারায় থাকলে রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে, যা আমদানি ব্যয় মেটানো এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একক মাসে প্রবাসী আয় ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সদ্য বিদায়ী মার্চ মাসে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা এখনও পর্যন্ত একক মাসে রেমিট্যান্স আয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ব্যাংকারদের মতে, অর্থপাচার কমে যাওয়া ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ৩২৯ কোটি ডলার, যা গত বছরের মার্চে ছিল ১৯৯ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৭ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে। শুধু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই এসেছে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার ফলে ব্যাংকিং খাতে ডলার সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। ডলারের দামে অস্থিরতা কমে এসেছে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরেছে। বর্তমানে আন্তঃব্যাংক বাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আমদানিকারকদের জন্য স্বস্তির বার্তা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসী আয় দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। এটি বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, সামনের মাসগুলোতেও রেমিট্যান্সের এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে। এতে সামগ্রিক অর্থনীতিতে পড়বে সুদূরপ্রসারী প্রভাব।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.