Sharing is caring!

নাইনটিন কিটস—একটি স্পোর্টসওয়্যার ব্র্যান্ড, যার সূচনা ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি, কিছু স্বপ্ন, কিছু সংকল্প আর দায়িত্ববোধকে ঘিরে। এটি শুরু হয় দু’জনের যৌথ উদ্যোগে, যার একজন সময়ের স্রোতে হারিয়ে যান, আর অন্যজন ধীরে ধীরে পুরো হাল ধরেন। সেই সাহসী হাতে গড়া উদ্যোগই এখন ছোট ছোট পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে আপস্কেলের পথে।
নাইনটিন কিটস নামটির পেছনে রয়েছে ১৯ শতকের প্রতি এক ধরনের শ্রদ্ধা ও অনুপ্রেরণা। ব্র্যান্ড ডিজাইন, মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিংয়ে সেই ‘মডার্ন-ভিন্টেজ’ ফিউশন রয়ে গেছে—পুরাতন সময়ের নান্দনিকতা আর বর্তমানের জেনারেশনাল স্পিরিট একসঙ্গে নিয়ে চলাই যাদের ভিশন। তারা শুধু পোশাক ডিজাইন করে না, তারা চেষ্টা করে গল্প গড়ার—যে গল্প তাদের সাথে যারা আছে, তাদেরও প্রতিনিধিত্ব করে। চলুন বিস্তারিত শুনি তাদের মুখেই-
নাইনটিন কিটস গড়ে ওঠার পেছনে একটি বড় কারণ ছিল—আমরা চাইনি মানুষ কেবল নিজেদের ভাল সময়ে আমাদের পাশে পাক, বরং খারাপ সময়েও যেন আমরা তাদের ছায়া হয়ে থাকতে পারি। ভাবনা ছিল, এমন কিছু করতে হবে যেটা একসঙ্গে ক্রিয়েটিভ, ইউনিক এবং ইমপ্যাক্টফুল—আর সেখান থেকেই আসে ‘কিটস’ ডিজাইনের ভাবনা। একটি পোশাক হতে পারে মানুষের আত্মপরিচয়ের বাহক, হতে পারে তার সংগ্রামের অংশ—এই বিশ্বাস থেকেই গড়ে ওঠে নাইনটিন কিটস।
আমাদের লক্ষ্য সোজাসাপ্টা—নাইনটিন কিটসের নামের সঙ্গতিপূর্ণভাবে আমরা আগামী দিনে ১৯ ধরনের কিটস বা প্রোডাক্ট বাজারে আনব। বর্তমানে আমাদের প্রধান সেবা হলো পার্সোনালাইজড ডিজাইন ও জার্সি প্রোডাকশন। সম্প্রতি আমরা যেটা নিয়ে বেশি সিরিয়াসলি কাজ করছি, তা হলো আমাদের নতুন সাব-ব্র্যান্ড ‘BUNONINE’। এই লাইনআপের মাধ্যমে আমরা এমন একটা জায়গায় দাঁড়াতে চাই, যেখানে অ্যাডিডাস, নাইকি, পুমার ক্লোন না হয়ে বরং একটা আলাদা আইডেন্টিটি তৈরি করা যায়। যাদের এই ব্র্যান্ডগুলোর অল্টারনেটিভ দরকার কিন্তু মানসম্মত কিছু পাচ্ছেন না কিংবা বাজেট ফ্রেন্ডলি না হওয়ায় কিনতে পারছেন না—তাদের জন্যই আমাদের এই চেষ্টা।
আমরা এখনো অফিসিয়ালি ট্রাউজার বা শর্টস নিয়ে আসিনি, তবে বিভিন্ন অর্গানাইজেশনের জন্য পার্সোনালাইজড অর্ডারে কাজ করেছি। শুরুর দিকে আমাদের ক্যাপিটাল ছিল খুব সীমিত, কিন্তু ধীরে ধীরে নিজেরা ফান্ড জোগাড় করেছি। আমার বড় ভাই সালমান ভাইয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রতিটি উদ্যোগে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন—প্রয়োজনে প্রজেক্টে বিনিয়োগ করে পাশে থেকেছেন।
আমাদের কাজ এখন অনলাইনভিত্তিক হলেও আমরা বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় ডেলিভারি দিয়ে থাকি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্টও দিয়ে থাকি। ভবিষ্যতে আমাদের ইচ্ছে রয়েছে একটি ফিজিক্যাল আউটলেট খোলার—তবে তখনই, যখন আমরা নিশ্চিত হবো, ‘এইটাই সেই সময়’।
এই যাত্রা শুরু করার আগে আমরা একাধিক প্রশ্নে নিজেদের চ্যালেঞ্জ করেছিলাম—এই কাজটা কি সত্যিই আমাদের সমস্যার সমাধান দিতে পারছে? আমরা যদি নিজেদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই, তবে বিশ্বাস করি, অন্যদের জন্যও সমাধান এনে দিতে পারবো। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই আমরা অনেক সময় কস্ট কাট করতে পারি না, কারণ আমাদের অপারেশনাল এক্সপেন্স তুলনামূলক বেশি।
আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি যেন কেউ বাদ না পড়ে। অনেকে ৫০০ টাকা দিয়ে পতাকা কিনতে পারছিল না—আবার কেউ যাতে হতাশ হয়ে পতাকা না কেনে সেটাও চাইনি। তাই নাইনটিন কিটসের পক্ষ থেকে আমরা অফার করি মাত্র ১৮০ টাকায় পতাকা। আমাদের টিম ২৪ ঘণ্টা নিরবিচারে কাজ করে গেছে—নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পিকআপ পয়েন্ট সেটআপ, হোম ডেলিভারি, রেসিডেন্স থেকে সরাসরি ডেলিভারি, এমনকি রাতারাতি কুরিয়ার করে পাঠানোর মতো সব অপশন আমরা ব্যবহার করেছি, শুধু যেন যতটা সম্ভব মানুষ সময়মতো পতাকা পায়।
এটা আমাদের দায়িত্বের জায়গা থেকে একটুকু চেষ্টামাত্র। মানুষ আর মানবতার পাশে দাঁড়ানোর ছোট্ট প্রয়াস।