Sharing is caring!
সৈয়দ মতিউর রহমান শিমু
এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদের জয় পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৫ মার্কিন রাজনীতিবিদ। তাদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই ছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নির্বাচনি ফলাফল ও স্থানীয় কমিউনিটি থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে বিজয়ী বাংলাদেশিরা হলেন-নিউ হ্যাম্পশায়ার স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল বি খান (রিপাবলিকান), নিউ জার্সি প্লেইন্সবরো টাউনশিপের কাউন্সিলম্যান ড. নুরান নবী, কানেকটিকাট স্টেট সিনেটর মাসুদুর রহমান, জর্জিয়া ডিস্ট্রিক্ট ফাইভে স্টেট সিনেটর পদে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী শেখ মুজাহিদুর রহমান চন্দন ও একই স্টেটের অন্য একটি ডিস্ট্রিক্টের সিনেটর নাবিলা ইসলাম।
এদের মধ্যে কাউন্সিলম্যান ড. নুরান নবী পঞ্চমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২০০৭ সাল থেকে টানা ১৪ বছর এ পদে আছেন। তার টাউনশিপে একজন মেয়র এবং ৫ জন কাউন্সিলম্যান রয়েছেন। তিনি কাউন্সিলম্যান হিসাবে কালচারাল এবং হেরিটেজ বিষয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।
এছাড়া নিউ হ্যাম্পশায়ারের আবুল বি খান এ নিয়ে ছয়বার আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আবুল খান বলেন, ‘আমি খুবই আপ্লুত। মানুষ আমাকে ছয়বারের মতো সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করেছে। আমি রিপাবলিকান থেকে পাশ করলেও এখন আমি সর্বস্তরের, সব দলের মানুষের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করব। আমাদের সরকার সব সময়ই কর না বাড়ানোর পক্ষে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নতির পক্ষে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করব।
কিশোরগঞ্জের সন্তান শেখ মুজাহিদুর রহমান চন্দন টানা চতুর্থবারের মতো জর্জিয়ার ডিস্ট্রিক্ট-ফাইভ থেকে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী লিসা ব্যাবেজের চেয়ে তিনি ৭০ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছেন। তিনিই হচ্ছেন সেখানকার প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ও জর্জিয়ার প্রথম মুসলিম আইনপ্রণেতা।
সরারচরের বীর মুক্তিযোদ্ধা নজিবুর রহমানের ছেলে চন্দন ১৯৮১ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। জর্জিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি বিবিএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ৬৩ বছর বয়সি চন্দন টানা চতুর্থবারের মতো জয়ের মালা পরে প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সবার ভালোবাসা ও সহযোগিতায় বহুজাতিক সেতুবন্ধের একটি সমাজে সিনেটর হওয়ায় তিনি আবেগাপ্লুত।
নির্বাচিত বাংলাদেশি আমেরিকানরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট অর্থাৎ অঙ্গরাজ্য পর্যায়ের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার প্রতিনিধি। এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি-আমেরিকান ফেডারেল পর্যায়ে অর্থাৎ সিনেট বা কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচিত পাঁচজন ছাড়াও পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, নিউ জার্সিসহ অন্য অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি-আমেরিকান কাউন্টি ও অন্যান্য পর্যায়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তবে তাদের ফলাফল এখনো জানা যায়নি।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি ভোটাররা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসন ও সিনেটের ৩৪টি আসনের সিনেটর নির্বাচনেও ভোট দিয়েছেন।
এপি জানিয়েছে, সিনেটের যেসব আসনের ফলাফল এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে তাতে রিপাবলিকানরা এরই মধ্যে ৫২টি আসন নিশ্চিত করেছেন এবং ডেমোক্র্যাটরা ৪৪টি আসন পেয়েছেন। আর প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা পেয়েছেন ২০৯টি এবং ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছেন ১৮৭টি আসন।