আজ সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনাগত সন্তানের মুখখানাও দেখা হলো না আইনজীবী সাইফুলের

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৭, ২০২৪, ০৩:৫৩ অপরাহ্ণ
অনাগত সন্তানের মুখখানাও দেখা হলো না আইনজীবী সাইফুলের

Sharing is caring!

রেডটাইমস ডেস্ক,

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতিতে গিয়ে দেখা যায় হৃদয় বিদারক দৃশ্য। বিয়ের আড়াই বছর না পেরুতেই স্বামীকে হারিয়ে বুক চাপড়াচ্ছেন তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী। চোখে তার ঘোর অমানিশার অন্ধকার। আলিফের মা পুত্রশোকে বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন, বাবার বুকফাটা আর্তনাদ। শোকে মুহ্যমান পুরো এলাকার মানুষ।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সংঘর্ষে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালত ভবনের প্রবেশমুখে রঙ্গম কনভেনশন হলের পেছনে নিয়ে গিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে তাকে। এ খবরে রাত সাড়ে ৮টায় লোহাগাড়া সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

লোহাগাড়া সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল থেকে অপরাধীদের বিচার দাবি করা হয়। প্রায় দুই ঘন্টা বিক্ষোভকারীরা ‘আমার ভাই মরল কেন, জবাব চাই, জবাব চাই’ শ্লোগান দিতে থাকে।

এছাড়াও নিহতের স্ত্রী ইসরাত জাহান তারিনের বাড়ি লোহাগাড়া সদর সওদাগর পাড়ায়ও আত্মীয়-স্বজন ভিড় করে। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

নিহতের স্ত্রী ইসরাত জাহান তারিনের বড় ভাই তারেকুল ইসলাম বলেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের সঙ্গে তার বোন তারিনের বিয়ে হয় সাড়ে তিন বছর আগে।

তাদের তাজকিয়া নামের আড়াই বছরের এক কন্যা সন্তান আছে। তারিন এখন ৭ মাসের সন্তানসম্ভবা। স্বামীকে সন্ত্রাসীরা জবাই করে হত্যা করেছে এ খবর শোনার পর বেহুঁশ হয়ে গেছে তারিন। তার ভবিষ্যৎ কী হবে! তার সন্তানদের কী হবে সব মিলিয়ে তারিনের চোখে ভর করছে ঘোর অমানিশার অন্ধকার।

তিনি আরও বলেন, ‘খুনিরা আমার বোনের অনাগত সন্তানের মুখ দেখতে দেয়নি তার বাবাকে, নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করেছে। অবিলম্বে খুনিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

নিহতের প্রতিবেশী নেছার আহামদ মেম্বার বলেন, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতী ইউনিয়নের ফারাঙ্গা এলাকায়। পুরো গ্রাম জুড়ে শোকের মাতম চলছে, কাঁদতে কাঁদতে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন তার মা। শোকে পাথর হয়ে বেহুশ হয়ে গেছেন তার স্ত্রী।

মঙ্গলবার মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে দুপুর ১২টা ৪৩ মিনিটে তিনি ফেস দ্য পিপল এর একটি কার্ড তার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার দিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানে লেখা ছিল, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল ছাত্র সংগঠন এক হয়ে আগামী এক সপ্তাহ ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালন করবে। ৫ আগস্টের পর এই প্রথম সব ছাত্র সংগঠন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একই কর্মসূচি পালন করবে।’

এই পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, গুড ইনিশিয়েটিভ।