Sharing is caring!
টাইমস নিউজ
সম্প্রতি হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপিভি) নামক একটি নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, যা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। চীন ও জাপানে মূলত এটি দেখা গেছে । তবে মালয়েশিয়া হংকং এ ছড়িয়ে পড়্রেছে।
ভাইরাসটি করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এইচএমপিভি প্রথম শনাক্ত হয় প্রায় দুই দশক আগে, তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো অনুসরণ করে এ ভাইরাসও প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে টানা ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ স্পর্শ না করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা।
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, করোনার সময়ে হাসপাতালে যেভাবে ভিড় তৈরি হয়েছিল, একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাবেও। জাপানেও একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম বলছে, চলতি মৌসুমে সেখানে ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ সাত লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা, বিশেষ করে আগে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল। শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কোনো সমস্যা এখন থেকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। এ ধরনের জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে এ ভাইরাস।
* উপসর্গ
এইচএমপিভি (হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস) আক্রমণ করলে সাধারণত নিম্নলিখিত উপসর্গ দেখা যায়:
▶ সাধারণ সর্দি ও কাশি : ঠান্ডা লাগার মতো প্রাথমিক উপসর্গ।
▶ জ্বর : মাঝারি থেকে উচ্চমাত্রার জ্বর হতে পারে।
▶ শ্বাসকষ্ট : শ্বাস নিতে কষ্ট বা দ্রুত শ্বাস নেওয়া।
▶ গলা ব্যথা : গলায় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা।
▶ শ্রান্তি : দেহে দুর্বলতা বা অবসাদ।
▶ নাক দিয়ে পানি পড়া : সর্দি বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
▶ বুকে অস্বস্তি : বিশেষ করে ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়ালে।
* ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি
▶ শিশু উপরের উপসর্গগুলো।
▶ বয়স্ক ব্যক্তি।
যাদের আগে থেকেই শ্বাসতন্ত্রের কোনো রোগ রয়েছে (যেমন-হাঁপানি, সিওপিডি)
▶ দুর্বল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার ব্যক্তিরা।
* চিকিৎসা
বাসায় থেকেও এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। হালকা উপসর্গ থাকলে বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে লক্ষণ অনুযায়ী সতর্ক হতে হবে।
* বাড়িতে করণীয়
▶ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
▶ পানি ও তরল খাবার খাবেন। শরীর হাইড্রেটেড রাখতে হবে।
▶ জ্বর থাকলে, প্যারাসিটামল বা জ্বর নিয়ন্ত্রণের ওষুধ (ডাক্তারের পরামর্শে)।
▶ গলা ব্যথার জন্য গরম পানি দিয়ে গার্গল করুন। কিছুক্ষণ পরপর করবেন।
▶ বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন। রোগীর ঘর সঠিকভাবে বায়ুচলাচল রাখতে হবে।
▶ মাস্ক পড়ুন সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে।
* ডাক্তারের পরামর্শ কখন প্রয়োজন
▶ শ্বাসকষ্ট বাড়লে।
▶ উচ্চমাত্রার জ্বর যদি কয়েকদিন ধরে স্থায়ী হয়।
▶ শিশু বা বয়স্ক ব্যক্তিরা আক্রান্ত হলে।
▶ ফুসফুসে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে (যেমন-ক্রমাগত কাশি, বুকে ব্যথা)।
* চিকিৎসা ও হাসপাতালে যাওয়া
▶ যদি রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয় বা অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়, তাহলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া উচিত।
▶ এ রোগের জন্য নির্দিষ্ট কোনো টিকা বা অ্যান্টিভাইরাল নেই, তাই চিকিৎসা সাধারণত উপসর্গ নিরাময়ের ওপর নির্ভর করে।
অতএব, হালকা উপসর্গ হলে বাসায় বিশ্রাম নিয়ে সেরে ওঠা সম্ভব, তবে অবস্থা জটিল হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।