আজ রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হত্যার আগে ফেসবুক লাইভে সুমন বললো, আমাকে কেউ বাঁচান- ওরা আমাকে মেরে ফেললো

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ০১:২২ অপরাহ্ণ
হত্যার আগে ফেসবুক লাইভে সুমন বললো, আমাকে কেউ বাঁচান- ওরা আমাকে মেরে ফেললো

Sharing is caring!

মাহমুদুন্নবী, পত্নীতলা ( নওগাঁ ) প্রতিনিধি:
আমাকে কেউ বাঁচান, আমাক মেরে ফেললো, আমাকে কেউ বাঁচান, ওরা আমাক মেরে ফেললো। বুলবুল ভাই আমি আপনাক বড় ভাইয়ের মতো দেখতাম। আপনি আমাক প্রলোভন  দেখিয়ে মেরে ফেললেন? আপনার থেকে আমি কখনোই ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেই নি বুলবুল ভাই, আপনার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম অনেক আগে, আপনি বলেছিলেন কখনো বিপদে পড়লে নিও, চাকরি কথা ভেবে আমি নিয়েছিলাম, সুদ হাজারে ২০ টাকা দিন ধরে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিছি। আপনি ফাঁকা চেক আর স্ট্যাম্প নিয়ে আপনি আমার সাথে এতো কিছু করলেন? এখন আপনি বলছেন ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পান, সব কিছু বাদ দিয়ে ৮ লাখ ৫০ টাকা টাকা। তাও আমি দিতে চাইলাম। আমি টাকা নিয়ে আসতেছিলাম মহাদেবপুর থেকে আপনি ছাড়া আর কেউ জানতো না ভাই। ভাই আপনি আমার পিছনে লোক লেগে দিয়ে আমাকে মেরে ফেললেন ভাই। ওরা আমাক খুঁজিচ্ছে আমি লুকিয়ে আছি ভাই। আমি নজিপুরের সকল ছাত্র জনতার কাছে অনুরোধ করছি আমি ওর কাছ থেকে মাত্র ৭০ হাজার টাকা নিয়ে আগে ওক দিয়েছি ৭ লক্ষ টাকা। আবার আজ ১০ লাখ টাকা এক জায়গা থেকে নিয়ে আসিচ্ছিলাম ওকে দিবো বলে ৮ লাখ ৫০। মান সন্মান রক্ষার জন্য। ওই রাজনীতির ভয় দেখায়। এখন বিএনপি’র ভয় দেখায়। ওই আমার কাছ থেকে জোড় পূর্বক স্ট্যাম্প করে নেয় আমার কাছ থেকে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাবে বলে। আমি ওর বিচার চাই। আমার মা ছাড়া আমার কেউ নেই। আমার মাকে এখন কে দেখবে ভাই। আমার মাকে দেখার মতো কেউ নেই। ওরা আমাকে খুঁজিচ্ছে, আমি লুকিয়ে আছি, ওরা বলতেছে ৫ লাখ টাকা আমাদের আর ৫ লাখ টাকা বুলবুলের। আমার কি দোষ ভাই। আমকে শেষ করলেন। আমার মাকে কে দেখবে, আমার ভাগিনাদের কে দেখবে, আমার বোনকে কে দেখবে। মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে এসে ৫ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের লাইভে ঠিক এভাবেই বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন মো: সুমন হোসেন।
পরে রাত সারে ১০ টার দিকো নাপিত পুকরা’র একটি কাঁঠাল গাছে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করে।
নিহত সুমন হোসেন পত্নীতলা উপজেলার বিলছাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। নিহত সুমন নজিপুর বাসস্ট্যান্ড মসজিদ মার্কেট এর ফটোস্ট্যান্ড ব্যবসায়ী ও নজিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ এর অনার্স ৪ র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পত্নীতলা উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সদস্য মো: মারুফ মোস্তফা বলেন,  নিহত সুমন ফেসবুক লাইফে এসে ছাত্র জনতার কাছে বিচার দাবি করেছিলেন। সুমনের হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান।
এছাড়াও সুমনের হত্যার ঘটনাটি ছাড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে সর্বস্থরের জনগণ সুমন হত্যার বিচার চেয়ে বিভিন্ন ভাষায় পোষ্ট দিয়েছেন এবং সোমবার সকাল থেকেই নজিপুর বণিক সমিতি ও নজিপর সরকারি কলেজ এর শিক্ষার্থীরা নজিপুর বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেছেন।
এবিষয়ে পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) শাহ মো: এনায়েতুর রহমান বলেন, ওই ফেনবুক আইডি টি সুমনের কি না কিংবা লাইভের অডিও’র ওই ব্যক্তিটি কে তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুলবুল নামে কোন ব্যক্তির সাথে সুমনের আসলেই কোন আর্থিক লেনদেন ছিলো কিনা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এসবের সত্যতা বের হলেই আসল রহস্য উন্মোচন হবে।