জীবন তাপস তন্ময়
জাতীয় ঐক্য। এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। আমাদের জাতীয় ঐক্য দরকার। হাসিনা রেজিম ছিল যখন, তখন থেকেই বলছি।
আমি চেয়েছিলাম জাতীয় ঐক্য'র ডাক দেবেন হাসিনা নিজেই। হাসিনা শুনলেন না। তিনি শুনলেন ভুট্টো সাহেবের কথা।
হাসিনা কেন? তখন তিনিই ছিলেন নির্বাহী। ফ্যাসিবাদ স্বৈরাচার হিসেবে কেউই তখন তাঁকে দোষারোপ করেননি। যদিও মসনদ ক্ষমতা প্রশ্নে এইসব কর্তৃত্ববাদ প্রাসঙ্গিক হিসেবেই থাকে। সব সময়। সব রকম ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে স্বৈরাচারি ও ফ্যাসিবাদের চরিত্র হয়ে যায় সব রাষ্ট্রনায়ক। সেটা হাসিনার মধ্যেও ছিল। গণতন্ত্র ভোটাধিকার সব মত পথের নাগরিক ও রাজনৈতিক দলের উদার স্বাধীনতা ছিল না। তবুও আমি দেখেছি হাসিনা ডাকলে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে। হন্তদন্ত হয়ে তাঁর ডাকে আসে সবাই। সম্মানিত বোধ করে। এইটাকে আমি সুযোগ বলছিলাম। জাতীয় ঐক্য'র।
এই ঐক্যটা চেয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন সবাই এক ও অভিন্ন ছিল। জামা'ত আলবদর আলশামস রাজাকার ছাড়া। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের সবাইকে নিয়েই জাতীয় ঐক্য হতে পারতো। দেশ নির্বাহী হিসেবে হাসিনাই সেই কাজটা করতে পারতেন। আওয়াজ ও আয়োজন টা তিনিই করতে পারতেন। হতে পারতো বয়স বা জাতীয় ব্যক্তিত্ব বিবেচনায় অন্য কেউ সমন্বয়ক থাকতেন। একাধিক হতে পারতো সংখ্যাটা। গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বদের নিয়ে। সেটা হলে দেশ আজ এমন হুমকির মুখে পড়ত না।
জাতীয় ঐক্য'র ডাক দিলেন ইউনুস। কী ছিল এর নেপথ্যে? জাতীয় ঐক্য বলতে হাসিনা ও আওয়ামী বিরোধিতা। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধিতা। ভারত বিরোধিতা। 'লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান...' মতাদর্শ ও প্রেমিদের ঐক্য। এটাকে কখনই দেশ ও মানুষের কল্যাণরাষ্ট্র নির্মাণের আদর্শ মনে হয় না। যদিও বলা হচ্ছে দেশ হুমকির মুখে পড়েছে। এই হুমকি থেকে রক্ষা করতে এই জাতীয় ঐক্য। গলদ রয়েছে প্রচুর এই তথাকথিত জাতীয় ঐক্য'র। অথচ ইউনুসের সুযোগ ছিল। তিনি চাইলে সব মত পথের নাগরিক ও রাজনৈতিক দলের জাতীয় ঐক্য হতে পারতো। তবে সেজন্য যে ত্যাগ দরকার ছিল সেটা করার উদার মন ও মানসিকতা তাঁর নেই। তিনি মূলত হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতেই দেশবিরোধী মাস্টারপ্ল্যানে পা দিয়েছেন।
দেশের শান্তি নিরাপত্তা ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের জন্য ঐক্য জরুরি। যেজন্য নির্মোহবাদ রচনা করতে হবে। আন্তর্জাতিক সব শক্তির প্রতি। স্বাবলম্বিতা রচনা করতে হবে। নিজেদের শক্তির উপর আস্থা রেখে। অন্য কোন ভিনদেশি শক্তির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে ভিনদেশী শক্তির প্রতি।
এখন একটা প্রশ্ন। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষশক্তিকে কেন আমি জাতীয় ঐক্যে চাই? ওরা যেহেতু এখন দল হিসেবেও দীর্ঘদিন এই দেশে নিবন্ধিত হিসেবেই কাজ করছে, আমি তাই এড়াতে চাই না এদের। ওরা এসে ওদের কথাই বলবে। কিন্তু সব মত পথের নাগরিক ও রাজনৈতিক দলের ঐক্যে থাকতে সম্মানিত বোধ করবে। যেহেতু ভারত বা ওদের বিরুদ্ধ কোন ভিনদেশির স্বার্থকে চরিতার্থ করা হবে না। তাই ওরা পাকিস্তানিপ্রীতি নিয়েও এই ঐক্যে শামিল থাকবে। সবাই রাজসাক্ষী হবে ওদের। যদি পরবর্তীতে কোন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করে। সবাই মিলে ওদের শাসন করবে। আমি শাসন বলছি । প্রতিহত বলিনি। খেয়াল করবেন। পরিবারের দুষ্টু ও নষ্ট সদস্যকে শাসন করাই হয়। বাদ দেয়া হয় না। বাংলাদেশ একটা পরিবার। এর সব নাগরিক এই পরিবারের সদস্য।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2024 RED TIMES. All rights reserved.