আজ রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমাদের একজন অনুপম সেন আছেন

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৮, ২০২৪, ০৭:২৪ পূর্বাহ্ণ
আমাদের একজন অনুপম সেন আছেন

Sharing is caring!

কুমার প্রীতিশ বল 

 

বাংলাদেশে এখনও যে ক’জন উদার মানবতাবাদী মানুষ বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনে আপোষহীন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন এঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য।প্রাচীন-আধুনিক-উত্তর আধুনিক শিল্প, সাহিত্য-সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতি-দর্শন বিষয়ে প্রাজ্ঞজন, রেনাসাঁ-পুরুষ ড. অনুপম সেনের জ্ঞান সমুদ্রে অবগাহন আমাদের পক্ষে দুঃসাহসের নামান্তর।
২.
সাদামনের আলোকিত পুরুষ অধ্যাপক ড. অনুপম সেন দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের কিছু আগে জন্মেছিলেন (৫ আগস্ট তাঁর শুভ জন্মদিন) সমকালের অন্যতম এক আলোকিত পরিবারে। পিতা ছিলেন আইনজীবী আর মা ছিলেন ব্রিটিশ আমলের ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত নারী। কবিভাস্কর শশাঙ্কমোহন সেনের উত্তরপুরুষ অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। ‘বাংলা সমালোচনা-সাহিত্য যাঁদের হাতে বিকশিত ও পুষ্ট হয়েছে কবি-সমালোচক শশাঙ্কমোহন সেন তাঁদের অন্যতম পুরোধাপুরুষ। বস্তুত তিনিই বাংলার তুলনামূলক সমালোচনা-সাহিত্যের জনক। অধ্যাপক আহমেদ শরীফ ‘বিশ শতকে বাঙালি’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে মাথায় রেখেও বলা চলে বাংলা ভাষায় প্রতীচ্য আদলের ও মানের সাহিত্য সমালোচনা প্রথম শুরু করেন কবিভাস্কর শশাঙ্কমোহন সেন।’ শশাঙ্কমোহন কেবলমাত্র প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অভিনব ব্যাখ্যাকারই ছিলেন না, মধুসূদন-সমালোচনারও তিনি পথিকৃৎ। তিনিই প্রথম সমালোচক যিনি মধুসূদনকে তাঁর অন্তর্জীবনের আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন।’ ফলে অধ্যাপক ড. অনুপম সেন আঁধার তাড়িয়ে আলোর নাচন সৃষ্টিতে এ জনপদের নিরচ্ছিন্ন এক বাতিঘর হতে পেরেছিলেন। পারিবারিক ভিত্তিটা তেমনই ছিল।
৩.
অধ্যাপক ড. অনুপম সেন দেশে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর পিএইচ.ডি-এর অভিসনদর্ভ ছিল ‘দি স্টেট, ইনডাস্ট্রিলাইজেশন এন্ড ক্লাস ফরমেশনস ইন ইন্ডিয়া। গ্রন্থটি যুক্তরাজ্যের প্রকাশক ‘রাউটলেজ’ কর্তৃক প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা ডেভেলাপমেন্ট স্টাডিজ ইত্যাদি বিষয়ের পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। অধ্যাপক মো. খালেদ অরুণ দাশগুপ্তের বাসায় একারণে বলেছিলেন, ‘ড. সেনের পরিচিতি এবং সম্মান দেশের চাইতে দেশের বাইরে অনেক বেশি।’ এছাড়াও অধ্যাপক ড. অনুপম সেন সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও বাংলা সাহিত্য-বিষয়ে পনেরোটির বেশি গ্রন্থ ও অনেক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো: দি পলিটিক্যাল ইথিকস অব পাকি¯তান : দেয়্যার রুল ইন পাকিস্তানস ডিসইন্টিগ্রেশন, বাংলাদেশ : রাষ্ট্র ও সমাজ; ব্যক্তি ও রাষ্ট্র : সমাজ-বিন্যাস ও সমাজ-দর্শনের আলোকে; আদি-অন্ত বাঙালি : বাঙালি সত্তার ভূত-ভবিষ্যৎ; বাংলাদেশ : ভাবাদর্শগত ভিত্তি ও মুক্তির স্বপ্ন; কবি-সমালোচক শশাঙ্ক মোহন সেন; বাংলাদেশ : ভাবাদর্শগত ভিত্তি ও মুক্তির স্বপ্ন;[বিলসিত শব্দগুচ্ছ (প্রতীচী ও প্রাচ্যের কয়েকটি কালজয়ী কবিতার অনুবাদ); জীবনের পথে প্রান্তরে; সুন্দরের বিচার সভাতে; ইতিহাসে অবিনশ্বর; বাংলাদেশ ও বাঙালি : রেনেসাঁস, স্বাধীনতা-চিন্তা ও আত্মানুসন্ধান; বাঙালি-মনন, বাঙালি-সংস্কৃতি : সাতটি বক্তৃতা;
বিচিত্র ভাবনা।
৪.
অধ্যাপক ড. অনুপম সেন সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য এক অনন্য বাতিঘর। তিনি পরমতসহিষ্ণু এক বটবৃক্ষ। ৫০ এবং ৯০-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং নিপীড়নের প্রত্যক্ষদর্শী আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক মানুষটির সব শ্রেণি, পেশা,ধমের্র মানুষের প্রতি তাঁর রয়েছে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। তাঁর চারিত্রিক এই দৃঢ়তা, পরমত সহিষ্ণুতা, এবং পান্ডিত্য তাঁকে করে তুলেছে সর্বজন শ্রদ্ধেয়। দেশের নানা উত্থান-পতন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে তিনি পালন করেছেন অগ্রণী ভূমিকা।
৫.
সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন খুবই বন্ধুবৎসল, স্নেহপরায়ন অভিভাবক। মানুষকে আপ্যায়নে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। এ প্রসঙ্গে তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করছি। চট্টগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে কোনো এক বিশিষ্টজনের একটা সভা হয়েছিল কোনো এক রেস্টুরেন্ট্। সভাশেষে বিল দেওয়ার সময় আয়োজকরা একটু টানাটানিতে পড়ে যায়। ব্যাপারটা উপস্থিত সবার চোখ এড়ালেও ড. অনুপম সেনের চোখ এড়ায়নি। তিনি তাঁদের একজনকে ডেকে নিজের ক্রেডিড/ডেভিড কার্ড বের করে দিয়ে বললেন, এখান থেকে বিলটা পরিশোধ কর। ড. অনুপম সেন-এর আপ্যায়নের উদারতার কথাটি জানা যায় রামেন্দু মজুমদারের একটি বক্তব্যে। তিনি মহিলা সমিতি মঞ্চে থিয়েটারের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে বাড়ি থেকে টাকা আসতে দেরি হলে অনুপমদা বই জমা রেখে বন্ধুদের খাওয়াতেন। বিকালবেলা হলে খাওয়ার ইচ্ছে হলে এবং পকেটে টাকা না থাকলে আমরা অনুপম দার কাছে চলে আসতাম।’ চট্টগ্রামে অরুণদাদা মনির বৌদ্ধমন্দির রোডস্থ বাসায় প্রতি বুধবার সন্ধ্যায় জমজমাট আড্ডা বসত। বুধবারের সে আড্ডায় ওখানে নিয়মিত আসতেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক প্রয়াত অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক জহুরুল হক, প্রদীপ দেওয়ানজী, অজয় দাশগুপ্ত প্রমুখ। আমরা তরুণরা মাঝে মাঝে সে আড্ডায় তাকতাম। অরুণ দাদামনি আপ্যায়নের ব্যবস্থা করলেও অধ্যাপক ড. অনুপম সেন আসার সময় হাতে করে একটা বড় সর প্যাকেট নিয়ে আসতেন। একদিন খুব সম্ভব অজয় দাশগুপ্ত বললেন, স্যার আপনি প্রতিদিন আসার সময় খাবার আনতে হবে না। কষ্ট করে আসবেন আবার খাবার আনবেন এর কোন দরকার নেই। আসছেন এই তো আমরা ধন্য। অজয়দাশ গুপ্তের কথায় অধ্যাপক ড. অনুপম সেন হাসলেন। তিনি বললেন, ‘তেমন কিছু আর আনলাম।’ তখন অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ বলেছিলেন,‘আপনারা আর কত খেয়ে ফুরাতে পারবেন। উনি লেখালেখি করে দেশের বাইরে থেকে যে পরিমাণ রয়ালটি পান, তার একচুল ভরও আপনারা খেতে পারছেন না। আমাদের দেশে ড. অনুপম সেনের মতো এত টাকা রয়ালটি পান এমন মানুষ খুব বেশি নেই।’ দৈনিক আজাদীর সম্পাদক প্রয়াত অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ এর মাধ্যমে ড. অনুপম সেনের আন্তর্জাতিক অঙ্গণে সমাজবিজ্ঞানী হিসাবে পরিচিতির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্যে তাঁর কাছে গেলে তিনি পরামর্শের সঙ্গে সঙ্গে অনুদানও দিয়ে থাকেন।
৬.
ড. অনুপম সেন সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি খেলাধুলাও পছন্দ করতেন। ক্রিকেট তাঁর প্রিয় খেলা।
৭.
অর্থের প্রতি তাঁর কোনো মোহ নেই। তাই পারিবারিক ব্যবসা থাকলেও তিনি কোনোদিনই এ ব্যবসার খবর নেননি। তাঁর মা যতদিন বেঁচে ছিলেন তিনি দেখেছেন। তাঁর একজন ম্যানেজার ছিলেন তিনি দেখতেন। পরিশেষে লাইসেন্সটা বিক্রি করে দেন নামমাত্র মূল্যে।
৮.
২৫ বছর বয়সে অনুপম সেন পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বর্তমান বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েট) সমাজতত্ত্ব ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষা সহায়ক (টি.এ.) ও টিউটরের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে দেশে ফিরে পুনরায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদে কর্মরত ছিলেন। ড. সেনের তত্ত্বাবধানে বা সুপারভিশনে অনেক গবেষক বিভিন্ন বিষয়ে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পি.এইচ.ডি গবেষণা কর্মের পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখনও তাঁর তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু গবেষণাকর্ম পরিচালিত হচ্ছে।
অধ্যাপক ড.অনুপম সেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিভূ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি-ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একবার তাঁর এক ছাত্র বিদেশ থেকে আসার সময় প্রায় লক্ষাধিক টাকার এক ঘড়ি উপহার আনেন।তিনি ছাত্রের উপহার গ্রহণ করে মাথায় ছুঁয়ে টেবিলে রাখেন। তারপর ছাত্রকে যথারীতি আপ্যায়ন করে তার কুশলাধি জিজ্ঞেস করেন। আলোচনার এক ফাঁকে তিনি ঘড়িটির দাম জিজ্ঞেস করেন। ছাত্রটি সহজ সরলভাবে দাম জানিয়ে দেয়। কথাবার্তা শেষে ছাত্রটি চলে যেতে চাইলে ড. অনুপম সেন তাকে ঘড়িটি নিয়ে যাওয়ার জন্যে বলেন। ছাত্রটি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এত টাকার দামি ঘড়ি হাতে দেওয়ার মতো যোগ্যতা বা ক্ষমতা আমার নেই। তুমি এটা কোনো বিত্তবান বন্ধুকে দান কর।আমি অতবড় বিত্তবান নয়। সেদিন ড. সেনের সেই ছাত্র ঘড়িটি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। সত্যিকারার্থে ড. অনুপম সেন বিত্তবান নন, তিনি চিত্তবান। তিনি আমাদের চেতনার বাতিঘর।
৯.
অজয় দাশগুপ্ত লিখেছেন, ‘ ঢাকার বাইরে থেকেও যাঁরা দেশময় আলো ছড়ান তাঁদের জন্য আলাদা ভালোবাসাও কৃতজ্ঞতা আছে মানুষের। এমন কিছু মানুষ এদেশ ও জাতির স্তম্ভ। যেমন একসময় সিলেট বলতেই জানতাম কবি দিলওয়ার।বরিশাল মানে আরজ আলী মাতব্বুর। রাজশাহী বলতেই হাসান আজিজুল হক বা সনৎ কুমার সাহা। ময়মনসিংহ বললেই যতীন সরকার। তেমনি চট্টগ্রাম ও অনুপম সেন মিলেমিশে একাকার। যৌবনে তাঁর স্নেহ সাহচর্য পেয়েছি। কাছ থেকে দেখা একজন হৃদয়বান সরল মানুষ। বয়সের ভারে অতীত ও ইতিহাস তাঁর বলার বিষয় হলেও তিনিই একা এখন আগলে রেখেছেন চট্টগ্রামের দুর্গ। তাঁর উপস্থিতি বলে দেয় অনুপস্থিত কতো মারাত্মক শূন্যতা তৈরি করতে পারে।’ অধ্যাপক ড. অনুপম সেনের বর্ণাঢ্য জীবনের আলোকিত আট দশকের বেশি সময়কে তুলে ধরার মতো প্রাজ্ঞতা আমাদের নেই। এখানে সেই দুঃসাহসিকতা দেখানোর কোনো চেষ্টাও নেই। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা, আমাদের প্রগতিশীল ধারার এই মহান বাতিঘরের আলোকে আলোকিত হয়ে নিজেদের হৃদ্য করতে। সেই অভিপ্রায় থেকে আধাঁর ভেঙে আলোর বুননের অভিযাত্রী বোধন আজ আয়োজন করেছে অধ্যাপক ড. অনুপম সেনের কবিতা, অনুবাদ, প্রবন্ধ, গবেষণা থেকে নিয়ে ‘অনুপম সময়’। এ যেন গঙ্গা জলে গঙ্গা পূজা। কারণ আমরা স্বপ্ন দেখতে চাই, তাঁর নির্মাণ করা পথ ধরে চলতে চলতে আমাদের ভাবীকালের মানুষগুলো এগিয়ে যাবে আরও সামনের দিকে একেবারে সূর্যের কাছে।