Sharing is caring!
প্রকৌশলী মো মনির হোসেন
মানবাধিকার লংঘন বন্ধে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে স্থায়ী সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটির ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২৫-এ এ কথা জানানো হয়। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি। সেখানে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য কমিশন গঠন করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
কর্তৃত্ববাদী হাসিনার শাসনামলে মানবাধিকার লংঘনের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। জুলাই-আগস্ট মাসে তিন সপ্তাহব্যাপী ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমনের নামে প্রবল দমন-পীড়নের মাধ্যমে নির্বিচারে গোলাবারুদ ব্যবহার করেছে আইন শৃংখলাবাহিনী সদস্যরা। এতে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
৫৪৬ পৃষ্ঠার ওই ওয়ার্ল্ড প্রতিবেদনের ৩৫তম সংস্করণে বিশ্বের শতাধিক দেশের মানবাধিকারের ওপর পর্যালোচনা পেশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটির পরিচালক তিরানা হাসান লিখেছেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, মানবাধিকার কর্মী এবং সাংবাদিকদের ওপর অন্যায়ভাবে দমন-পীড়ন চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া তাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং সরকারি বাহিনী বেআইনিভাবে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে। অনেককে তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিতারিত করা হয়েছে।
এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কিন্তু ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও আন্তর্জাতিক সমর্থন না পেলে এসব পদক্ষেপের অগ্রগতি হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা দেয়া, গুম নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বেসামরিক তদারকির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
এইচআরডব্লিউ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী অধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রেখেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার মধ্যে বিরোধী সমর্থক ও সাংবাদিকদের নির্বিচারে গ্রেপ্তারের ঘটনাও রয়েছে। তাদের যথাযথ প্রক্রিয়া ও আইনি পরামর্শের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘে জোরপূর্বক গুম সংক্রান্ত কনভেনশনে সম্মতি দিলেও, নিরাপত্তা বাহিনী বেআইনিভাবে আটককৃতদের মুক্তি দিতে বা তাদের সঙ্গে কী ঘটেছে সে সম্পর্কে তাদের পরিবারকে উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছে।বিতর্কিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব) ভেঙে স্বাধীন তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সংস্কার করারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
প্রকৌশলী মো মনির হোসেন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
monirece.siu@gmail.com