টাইমস নিউজ
রংপুরে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের বিভাগীয় মহাসমাবেশে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার আট দফা দাবিতে মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, এ সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় তাদের বহনকারী পরিবহনে হামলা চালানো হয়েছে। কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে হামলায় ৩৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সমাবেশে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
মহাসমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশজুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নানা অত্যাচার-নির্যাতন ও সহিংস ঘটনার শিকার হচ্ছে। ভয়ভীতির মধ্যে তারা জীবনযাপন করছেন। সরকারের কাছে তারা এসব বন্ধের দাবি জানান। অন্যথায় দেশজুড়ে জাগরণ জোট ও এর অঙ্গসংগঠন তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শ্রীমৎ কুশল বরণ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইসকনের সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।
বক্তব্য দেন ফরিদপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের ব্রহ্মচারী শ্রীপাদ গোপীনাথ, চট্টগ্রামের ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের ব্রহ্মচারী লীলারাজ গৌর দাস, স্বামী বিদ্যানন্দ, স্বামী ওমেষানন্দ, লীলা রাজ প্রভু, রণনাথ মহারাজ, জোট রংপুরের সমন্বয়ক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।
সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীদের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ‘হিন্দু ফাউন্ডেশনে’ উন্নীত করাসহ বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তর, ‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন এবং ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ ও প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা, ‘সংস্কৃত ও পালি শিক্ষাবোর্ড’ আধুনিকায়ন ও দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটিসহ প্রতিটি সম্প্র্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে প্রয়োজনীয় ছুটির দাবি জানানো হয়।
কুড়িগ্রাম জেলা সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক রাজিব সরকার অপু বলেছেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের কাউনিয়া পয়েন্টে একটি বাসে দুর্বৃত্তরা হামলা চালালে ৩০ জন আহত হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতরা চিকিৎসাধীন। আহত শিপুল কর্মকার বলেন, কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে বাস রিজার্ভ নিয়ে রংপুরে যাচ্ছিলাম। কাউনিয়া বাজারে আমাদের বাস আটকে একদল যুবক অতর্কিত হামলা করে। এতে ৩০ জন আহত হন।
একাধিক পয়েন্টে রিজার্ভ করা বাসগুলো আটকে দেওয়া হয়। ত্রিমোহনী, ধরলা সেতু, ফুলবাড়ী সেতু, বড়বাড়ী বাজারসহ একাধিক জায়গা থেকে রংপুরগামী মেইল যাত্রীবাহী বাসগুলো যেতে দেওয়া হলেও রিজার্ভ করা বাসগুলো যেতে দেওয়া হয়নি। বাসগুলোকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাঁচটি বাস ছেড়ে দেয়।
উলিপুরের যতিনের হাট গ্রামের বাসিন্দা সুকুমার চন্দ্র বলেন, দুপুর ১টার দিকে আমাদের তিনটি বাস ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা সমাবেশে যোগ দিতে পারিনি।
শিক্ষার্থী শিমুল দাস বলেন, বিক্ষোভ করলে বাস যেতে দেওয়া হয়।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল আলম বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসাবে আমরা শহরের একাধিক পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে সব ধরনের যানবাহন তল্লাশি করছি। মহাসমাবেশে কেউ যাতে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য বাস, ট্রাকসহ সব যানবাহন তল্লাশি করা হয়।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2024 RED TIMES. All rights reserved.