আজ বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিন্ময় দাসের মুক্তি চেয়ে তোপের মুখে ফরহাদ মজহার

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৪:০৪ অপরাহ্ণ
চিন্ময় দাসের মুক্তি চেয়ে তোপের মুখে ফরহাদ মজহার

Sharing is caring!

রেডটাইমস ডেস্ক:

চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনা সংঘের (ইসকন) নেতা ও সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ প্রভু ব্রহ্মচারীর মুক্তি দাবি করে তোপের মুখে পড়েছেন কলামিস্ট ও গবেষক ফরহাদ মজহার।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়ে চিন্ময় প্রভুর মুক্তি দাবি করেন ফরহাদ। স্ট্যাটাস দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ফরহাদের স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে মো. ওলিউর রহমান নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। সনাতনী, ইসকন, ফরহাদ মজহার নিপাত যাক’।

তৌফিকুল ইসলাম পিয়াস বলেন, ‘ঠিক বলেছেন ফরহাদ মজহার সাহেব, মোটা মাথা দিয়ে মোকাবিলা করা যায় না। কিন্তু আপনার চিকন মাথায় লেখা ‘রাজকুমারী হাসিনা’ কোথায় পালালো একটু বলেন তো?’

মো. আব্দুল আজিজ লিখেছেন, দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ড ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উসকানিদাতা হিসেবে তাকে (চিন্ময়) দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।

মিরাজুল ইসলাম মিরাজ বলেন, ‘সবই বুঝলাম। হিন্দু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়, তাহলে কি তাদের আইনের আওতায় আনা যাবে না?’

মুনশী নুরুজ্জামান বাবু লিখেছেন, লালনবাদ, পালনবাদ, সুফিবাদ, ইসকনবাদ সব মিলে আপনি বরবাদ’।

ফরহাদ উদ্দিন নামে এক নেটিজেন লেখেন, ‘উনি (ফরহাদ মজহার) যে সুফিবাদ নিয়ে আছেন, সেটা সুফিবাদ নয়, সেটা ভণ্ডামি। সুফিবাদ ভণ্ডামির নাম নয়’।

ফরহাদের সমালোচনা করে ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দুঃখিত, আপনার সঙ্গে পুরোপুরি একমত হতে পারিনি। হিন্দুরা সর্বত্র এখন পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে।

আরিয়ান রবিন লিখেছেন, ফরহাদ মজহারকে ইসকনের মুখপাত্র হিসেবে দেখতে চাই।

মো. আতাউল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সব সাধারণ হিন্দুরাই সাধারণভাবে জীবন যাপন করছে কিন্তু ইসকন সমর্থিতদের একটু উত্তেজনা ইদানিং বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ফরহাদ মজহারের কারণেই আজ দেশের এই অবস্থা বলেও মন্তব্য করেছেন মো. শিহাব নামের এক নেটিজেন।

আখতার বিন আমির নামে একজন লিখেছেন, পিনাকীর ‘গুরুর’ দরদ উতলায়া পড়ছে একজন সন্ত্রাসী/দেশদ্রোহীর জন্য।

রাশেদুল ইসলাম বলেন, গান্ধীবাদী মজহার তার আসল রূপে ফেরত আসছে। মুরুব্বি, এতো দিন এই লোক যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছিল আপনি দেখেননি? বিজেপি আরএসএসের গেরুয়া সন্ত্রাসীদের স্লোগান ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান এই লোক দিচ্ছিল যখন, আপনি ঘুমিয়ে ছিলেন নাকি তখন? উগ্র হিন্দুত্ববাদের সমর্থক এই লোকের জন্য এতো প্রেম কেন আপনার? সংখ্যালঘু কার্ড সব খানে চলে না মুরুব্বি।

নওশীন সাইয়ারা বলেন, কাকু, আপনার আসল রূপ এখন সামনে আসলো। চিন্ময়কে তো ইসকনই বহিষ্কার করছে। সবচেয়ে বড় কথা সে হাসিনার পুর্নবাসনের কথা তার বক্তব্যেই বলেছে।

ইসকন নেতা চিন্ময়ের মুক্তির বিরোধিতা করে ফরহাদ মজহারের উদ্দেশে শরীফুল ইসরাম রাইহান নামে একজন বলেন, কেন মুক্তি দেবে? তার নামে প্রচলিত আইনে মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং জ্ঞানপাপীর ভূমিকায় অবতীর্ণ না হওয়া উচিত।

ইঞ্জিনিয়ার মিরাজুল রভেল বলেন, ‘আপনার মতো দালালকে আগে বিশ্বাস করতাম এখন না। আপনিও ভারতের দালাল হয়ে গেছেন।’

সোহাইল আনোয়ার লিখেছেন, আপনি তো কয়েকদিন আগেই দেখলাম তার পায়ে চুমু দিয়ে আসছেন। আপনাদের মতো দুমুখো বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীরাই বাংলাদেশের আসল শত্রু।

শাহিদ শুয়াইব বলেন, আমাদের এ কথাও সুস্পষ্টভাবে মনে আছে যে, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সংঘ সুস্পষ্টভাবে ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল এবং জড়িতদেরকে শাস্তির আওতায় আনার কথাও বলেছিল আমরা ভুলি নাই। বরং আপনাদের মতো মানুষরাই তাদের মন পাওয়ার জন্য এখন রাজনীতি খেলছেন।

পারভেজ হোসাইন বলেন, সিঙ্গাপুর অমুসলিম রাষ্ট্র হয়েও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের সব কার্যক্রম কেন নিষিদ্ধ করল? ফরহাদ মজহার কী ব্যাখ্যা করতে পারেন।

হোসাইন ইফরান লিখেছেন, আপনার মতো মুসলিম আছে বলে আজকে মুসলমানরা নির্যাতনের শিকার হয়। আপনি হলেন মুসলমানদের কলঙ্ক। ইন্ডিয়াতে যে গুলি করে তিনজনকে হত্যা করল সেটার কোনো পোস্ট নাই কেন?’

উল্লেখ্য, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গত সোমবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন।

বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় এই মঞ্চেরও মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপির নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত)।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময়কে। গত জুলাই মাসে চিন্ময়কে বহিষ্কার করে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশ।