নুসরাত জাহান
রেডটাইমসসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় গতকাল একটা নিউজ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে , সাংবাদিক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে বেতনের বাইরে জমা হয়েছে ১৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিনি বিভিন্ন সময় ১২০ কোটি টাকা তুলেছেন। এখন স্থগিত করা তার ব্যাংক হিসাবে স্থিতি আছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে ব্যখ্যা দিয়েছেন মুন্নী সাহা । ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে তিনি একে "মিসলিডিং হেডলাইন" বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, · আজ দেশের অনেকগুলো নিউজ পোর্টাল এবং দৈনিকে আমার একাউন্টে কত টাকা তা নিয়ে কিছু মিসলিডিং হেডলাইন দেখে বিস্মিত হয়েছি।
অনেকেই আমার একাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা- এমন ফটোকার্ড বানিয়ে ক্লিক নিচ্ছেন।
যেখানে রিপোর্টে পরিস্কার করেই লিখেছেন মুন্নী সাহার স্বামীর বিজনেস একাউন্ট এম এস প্রমোশনসের লেনদেনের কথা। 'লেনদেন ' শব্দটা আমাদের বন্ধুরা নিশ্চয়ই বোঝেন। কবীর হোসেন তাপস একজন ব্যবসায়ী। ২০০২ সাল থেকে তার বিজ্ঞাপনী সংস্থা।
ব্যবসায়িক একাউন্ট খুলতে গিয়ে শুধু নমিনি হিসেবে আমার নাম দিয়েছেন। তার কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে আমার কোনো পার্টনারশিপ নেই। আমি তার কোনো গ্যারান্টারও নই।
২০০৭ সালে তিনি প্রমোশন নামে আর একটি কোম্পানি খোলেন। আবারো বলছি,
ব্যবসায়িক এ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে শুধু নমিনি হিসেবেই আমার নাম দিয়েছেন। তার কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে আমার কোনো পার্টনারশিপ নেই।
আসলে তিনি ওয়ান ব্যাংকের সাথে যে টোটাল লেনদেন করেন সেটি ১৩৪ কোটি। যা টোটাল লেনদেনের পরিমান। এই টাকা কখনোই জমা ছিল না।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার এই দীর্ঘ সময়ে লেনদেন, মানে ট্রানজেকশন মাত্র ১৩৪ কোটি টাকা! ব্যবসায়ী হিসেবেও খুব সফল বলা যায়না।
কোনো কোনো রিপোর্টে কৌশলে লিখেছে যে, ৫ আগস্টের আগে ১২০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। সেটাও যে লেনদেন, মানে ২২ বছরের বেতন বিল, ভাড়া, খরচ সবকিছু বাবদ; ২২ বছরের প্রতি মাসে মাসে হিসেবে তোলা সেটা এড়িয়ে, শুধুমাত্র ভুল বার্তা দেয়ার জন্য করা হয়েছে; সেটা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছি।
যে কোনো রাজনৈতিক পালা বদলে বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টিলেজেন্স ইউনিট যে কারোরই হিসাব চাইতে পারেন। সেই তালিকায় সাংবাদিক হিসেবে অনেকের সাথে আমার নাম ছিলো। এবং কর্তৃপক্ষ দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে অনুসন্ধান করেছে বলে আমার বিশ্বাস।
একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মনে করি, বাংলাদেশের যে কোনো ব্যবসায়ীর দীর্ঘ দিনের স্ট্যাবল ব্যবসায়, transaction ১৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয় ১৪ কোটি টাকা, কোনো গুরুত্বই বহন করে না।
শুধুমাত্র আমার নামটি নমিনিতে ব্যবহার করায় একজন individual ব্যবসায়ী সামাজিক হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন, এখনও তার লেনদেন ব্যাহত হচ্ছে।
আমি জানি এ ঘটনায় আমি যত ব্যাখ্যাই দেই না কেন, আমার নামের পাশে মিথ্যা অপপ্রচার কিছু শুনতেই... বিশ্বাস করতেই, একদল মরিয়া হয়ে আছেন।
বিভিন্ন মিডিয়ার সংশ্লিষ্টরা মনে মনে হলেও স্বীকার করবেন যে, এমন মিথ্যা শিরোনাম তারা করেছেন, কী আর্ন করার জন্য?
আমি ঘটনাটিকে বা আমাকে নিয়ে যা যা ঘটছে, তা blessings in disguised হিসেবে গ্রহণ করছি।
যদিও আমাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে ট্যাগ দিয়ে মামলা দেয়া হয়েছে, গত ১৪/১৫ বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তার পুরোটাই যে ভুল, তা অন্ততঃ এ ধরনের ইনভেস্টিগেশনে প্রমাণিত হলো।
বিগত ফ্যদিবাদী সরকারের দোসর হিসেবে ট্যাগ দিলেও গত ১০ বছর আমি এবং আমার মত আরো দুয়েকজন সেলিব্রিটি সাংবাদিক সরকারি অনুষ্ঠান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস কনফারেন্স কাভার করার তালিকায় নিষিদ্ধ ছিলাম। 'এক টাকার খবর' নামের অনলাইনের অনুমতিপত্র ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী দেন নাই।
সাংবাদিক হিসেবে কোনো সরকারি পদপদবী সুযোগও আমাকে নিতে হয়নি বলে আমি গর্বিত।
প্রধানমন্ত্রীর ইন্টারভিউ বা সালমান এফ রহমানের মুখের ওপর কড়া প্রশ্ন করায় নানান সময় আমাকে যে ভোগান্তুি পোহাতে হয়েছে, সেটা আমি সাংবাদিকতার শক্তিই মনে করি।
সাহা পরিবারে জন্ম বলে আমাকে ভারতের দালাল বলতে মুখিয়ে থাকা মানুষগুলো অন্ততঃ এই সরকারের স্বচ্ছ অনুসন্ধান থেকে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কতোটা অন্ধত্ব নিয়ে আমার ওপর অবিচার করা হয়েছে! যেটা গত ১৫/১৬ বছর ধরেই আমাকে সহ্য করতে হয়েছে।
বিগত সরকারের সময় আমি বারবার এসব মিথ্যাচারের ব্যাপারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যারাসমেন্টের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেও ফল পাইনি। বরং এই সরকারের স্বচ্ছতার প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো তদন্ত হওয়াতে আমি ব্যক্তিগত ভাবে স্বস্তি বোধ করছি।
রিপোর্টে, আমার সাথে জড়িয়ে কবীর হোসেন তাপসের একাউন্টে ১৪ কোটি টাকার স্থিতির খবর যারা দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
যারা ভুল ফটোকার্ড করে, 'মুন্নী সাহার এ্যাকাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা' লিখলেন, তাদের প্রতি দোয়া রইলো। যেন তারা বিভ্রান্তিমুলক হেডলাইন সাংবাদিকতা থেকে নিয়মের সাংবাদিকতা সম্মানের সাথে চর্চা করতে পারেন।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.