সৌম্যজিৎ দাস
জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ হলো গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ। গ্রিনহাউস গ্যাসের উদাহরণ হলো কার্বনডাইঅক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি।
এই গ্যাসগুলো (বিশেষত কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂)) তাপমাত্রা বাড়িয়ে পৃথিবীকে বিপদসীমার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ, আমাদের পৃথিবীর তাপমাত্রা ১৮৫০ সন হইতে ১৯৫০ সন (১০০ বছরে) পর্যন্ত বেড়েছে ১.১ ফারেনহাইড। ২০১০ সন হইতে ২০২০ সন পর্যন্ত (১০ বছরে) তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৩৬ ফারেনহাইড। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে গত এক বছরে (২০২৩) তাপমাত্রা বেড়েছে ২.৬১ ফারহেনহাইড।
জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রধান কারণ গুলো হচ্ছে -
১. জ্বালানি ব্যবহার: জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস) বিদ্যুৎ উৎপাদন ও যানবাহনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
২. কৃষি ও পশুপালন: গবাদি পশুর হইতে নির্গত মিথেন গ্যাস এবং কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সার থেকে নাইট্রাস অক্সাইড নিঃসরণ হয়।
৩. শিল্প উৎপাদন: সিমেন্ট, ইস্পাত, এবং প্লাস্টিক উৎপাদন প্রচুর CO₂ নিঃসরণ করে।
৪. পরিবহন ব্যবস্থা: যানবাহন ও বিমান চলাচলে ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বালানি গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধি করে।
৫. বন জঙ্গল ধ্বংস: বনভূমি ধ্বংসের ফলে কার্বন শোষণ কমে যায়।
জলবায়ু বিপর্যয় হতে রক্ষা করতে আমাদের কি কি করণীয় ---
১. সৌর এবং বায়ু শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। শক্তি সংরক্ষণ ও সঞ্চালনের জন্য উন্নত ব্যাটারি প্রযুক্তি প্রয়োজন।
২. কার্বন ক্যাপচার প্রযুক্তি যেমন বাতাস থেকে সরাসরি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের প্রযুক্তি আরও উন্নত করতে হবে। শিল্প কারখানাগুলোতে কার্বন ক্যাপচার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।
৩. স্বাস্থ্যকর কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন হিসাবে মাংসের বিকল্প যেমন ( প্ল্যান্ট-বেসড প্রোটিন) তৈরি করতে জোর দিতে হবে। জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৪. বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিমানের জন্য বিকল্প জ্বালানি আবিষ্কার করতে হবে।
জলবায়ু বিপর্যয় হইতে রক্ষার চ্যালেঞ্জ ও অগ্রগতি গুলো হচ্ছে -
১. নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য বড় পরিমাণে তহবিল প্রয়োজন। উন্নত দেশ গুলো কার্বন এমিশন কম করার জন্য উন্নয়নশীল দেশ এবং অনুন্নত গুলোকে ফান্ড দেওয়া।
2. শিক্ষা ও গবেষণায় আরও গুরুত্ব দিতে হবে।
৩. সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য প্রযুক্তির আদানপ্রদান যেমন প্রযুক্তিগুলো যাতে উন্নত দেশ ও উন্নয়নশীল দেশ উভয়ের জন্য সহজলভ্য হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যক্তিগত ভাবে আমাদের করণীয় পদক্ষেপ গুলো হচ্ছে -
১. বিদ্যুৎ অপচয় কমানো।
২. প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত করা।
৩. পরিবেশবান্ধব পণ্য কেনা।
৪. সচেতনতা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় প্রচারণায় অংশগ্রহণ।
৫. পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা যেমন আমরা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে এক গাড়ির সাহায্যে অনেক জন লোক চলা ফেরা করতে পারি। এইরকম করলে ফুয়েল এমিশন কম হইবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে, তবে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ, আজকের সিদ্ধান্তই ভবিষ্যতের পৃথিবীকে রক্ষা করবে।
-- সৌম্যজিৎ দাস, শ্রীভূমি, আসাম
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.