জাফর ইকবাল মৌলভীবাজার থেকে,
মৌলভীবাজার হোপ হাসপাতালে প্রতিবছর স্কলাপসের প্রজেক্টের আন্ডারে অসহায় দরিদ্র, বিশেষ করে চাবাগানের জরায়ুর জটিলতা সংক্রান্ত রোগীর ফ্রি চিকিৎসা ও অপারেশন দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে। প্রতি বছর প্রায় ৩ সস্রাধিক রোগীকে ফ্রি চিকিৎসা করছেন বিজ্ঞ চিকিৎসকরা।
টেংরা বাজার দাশটিলা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোগী বলেন, আমি একজন জরায়ু রোগে আক্রান্ত রোগী। হোপ হসপিটালে চিকিৎসা নিচ্ছি। টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানো আমার পক্ষে সম্ভব ছিলনা। এখানে ফ্রি চিকিৎসা করাতে পারছি। আমার পাশের বাড়ির একজন এখানে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। উনার কাছ থেকে শুনে এখানে এসেছি।
সদরের বর্ষী জোড়া থেকে আসা এক রোগীর বলেন, এখানে অপারেশন করেছি। কোন টাকা পয়সা লাগেনি। এখানে ভালো চিকিৎসা হয়।
চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন বলেন, আমার আন্টিকে নিয়ে এসেছি হোপ হাসপাতালে। এখানে ডাক্তার ফারজানা হক পর্ণা অপারেশন করেন। উনি অনেক ভালো অপারেশন করেন। কোন টাকা পয়সা লাগেনা।
হোপ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের দায়িত্বে থাকা শিপ্রা তরফদার বলেন, আমি হোপ হাসপাতালে অনেকদিন যাবৎ কাজ করছি। আমি অপারেশন থিয়েটারের দায়িত্বে আছি। আমাদের এখানে প্রতি মাসে ২০টা অপারেশন হয়। স্কলাপসের প্রজেক্টের আন্ডারে ফ্রি অপারেশন করা হয়। বিজ্ঞ ডাক্তার ফারজানা হক পর্ণা অপারেশন করেন। প্রশান্তি প্রজেক্টর মাধ্যমে ২০১৪ থেকে ফ্রি অপারেশন শুরু হয়েছে।
চিকিৎসক ডাক্তার ফারজানা হক পর্ণা বলেন, আমি কনসালন্টেন এন্ড গাইনি ২৫০ শয্যা মৌলভীবাজার হাসপাতালেে কাজ করছি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে। মৌলভীবাজার জয়েন্ট করেছি ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এ পর্যন্ত এখানে কাজ করে যাচ্ছি। এই ফ্রি চিকিৎসা শুরু হয়েছে ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়ে এ পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর ফ্রি চিকিৎসা চলছে। প্রতি মাসে আমরা ২০টা করে ফ্রি অপারেশন করেছি। এই হিসাবে ৩ হাজারের অধিক রোগি এখানে ফ্রি চিকিৎসা নিয়েছেন। এখানে যে ফ্রি চিকিৎসা দেয়া হয় তার কিছু ক্রাইটেরিয়া আছে। তারা হচ্ছে নিম্ন মধ্যবিত্ত আর দরিদ্র শ্রেণীর। মৌলভীবাজার অঞ্চলে ৯২টি চা বাগান আছে। এখানে খুবই নিম্নবিত্ত মানুষজন থাকে এবং তাদের অনেক বাচ্চাকাচ্চা থাকে, তারা অনেক হার্ডওয়ার্ক করে, ভারি কাজ করে এবং এই রোগিরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় বাচ্চা বেশি নেওয়া ও হার্ডওয়ার্কিং এর কারণে জরায়ু নিচে নেমে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে ভোগে। এবং তারাই বেশির ভাগ আমাদের কাছে আসে।
হোপ প্রাইভেট হাসপাতালের ডিরেক্টর নুসরাত জাহান শিফা বলেন, আমি হোপ প্রাইভেট হাসপাতালের ডিরেক্টর। ২০১৩ সাল থেকে আমাদের এখানে ডাক্তার ফারজানা হক পর্ণা অপারেশন করেন। এই চিকিৎসা এনজিও সংস্থা প্রশান্তি প্রজেক্ট এর মাধ্যমে হয়। ওরা কিছু টাকা আমাদেরকে দেয়। ওই টাকা দিয়েই আমরা জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা করে থাকি। এখানে দুই হাজারের অধিক রোগীর অপারেশন হয়েছে। এখন পর্যন্ত কারো কোন প্রকার সমস্যা হয়েছে বলে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। হাসপাতাল থেকেও আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করি সর্বোচ্চ সার্ভিস দেয়ার। এখানে চা বাগান কিংবা সমতলে বসবাসকারী নিম্ন মধ্যবিত্ত লোক চিকিৎসা নিতে আসে। এখানে যারা আসেন সমস্যা নিয়ে তাদেরকে ফ্রিতে চিকিৎসা দেয়া হয়। ওই প্রজেক্টটাই আসলে বাগানে বসবাসকারী হতদরিদ্র এবং গরিব অসহায় মানুষদের জন্য। বাগানি রোগিরাই বেশি থাকে। আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলতে চাই ডাক্তার ফারজানা হক পর্ণা এই প্রোজেক্টের চিকিৎসা সেবায় একজন নিবেদিত প্রাণ। এর প্রোজেক্টের কাজে আমার হাসপাতালের পক্ষ থেকে রুম দেয়া হয়েছে। আমাদের হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স এবং মাসিরা নিয়মিত রোগীদের সেবা করে যাচ্ছেন। ফ্রি অপারেশনে এসব সার্ভিসের কোন প্রকার ফি বা টাকা গ্রহণ করি না।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.