ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মালায় গতকাল রোববার আলোচিত নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফাতারি পরোয়ানা জারি করে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন তিনি।
এর আগে সোমবার সকাল ১০টায় পরীমনি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নিতে হাজির হন। এসময় পরীমনি মানুষের জটলা দেখে হাসতে হাসতে আদালতের এজলাসের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপরে তিনি আদালতের এজলাসে পেছনের একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন। কোর্ট ওঠার পর বিচারক অভিনেত্রীকে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বলেন। এ সময় তিনি বেঞ্চ থেকে উঠে আদালতের কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান।
এরপর পরীমনির পক্ষে তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, গতকাল (২৬ জানুয়ারি) মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য ছিল। পরীমনি অসুস্থ থাকায় আদালতে আসতে পারেননি। চার্জগঠন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আজ আত্মসমর্পণ করেছেন। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
এরপর বিচারক মো. জুনাইদ আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আশা করছি, সবাই কোর্টের ডিগনিটি (মর্যাদা) রক্ষা করবেন। কোর্টকে বিতর্কিত করবেন না। মামলাটা জামিনযোগ্য ধারার। আসলেই জামিন পাবেন বিষয়টা এমন নয়। বিচারাধীন বিষয়ে এভাবে আগে কথা বলাটা কতটুকু যৌক্তিক? আপনি কোর্ট অফিসার। এ বিষয়গুলো ভবিষ্যতে খেয়াল রাখবেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। অন্য দুই আসামি হলেন- পরীমনির সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিম।
মামলায় নাসিরউদ্দিন উল্লেখ করেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢোকেন এবং দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন।
গত বছর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সময়ে ১৮ এপ্রিল ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালত পিবিআইয়ের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। এরপর তারা ২৫ জুন ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন পান।