টাইমস নিউজ
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে।
বুধবার বিকালে তাকে সিএমএইচে নেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, আজ দুপুরে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুর্শিদ শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে যান। উপদেষ্টার নির্দেশনা এবং শিশুটির চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে শিশুটিকে সিএমএইচে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বিকাল ৫টার পর শিশুটিকে কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সে সিএমএইচে নেওয়া হয়। এ সময় শিশুটির সঙ্গে একদল চিকিৎসক ছিলেন।
এর আগে দুপুরে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভেন্টিলেটর যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে।
তিনি আরও জানান, পাশবিক নির্যাতনের কারণে শিশুটির যৌনাঙ্গে ক্ষত রয়েছে। তার গলার আঘাত গুরুতর। শিশুটির চিকিৎসায় গাইনি ও অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনায় আজ দুপুরে চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন শিশুটির মা।
এজাহারভুক্ত চার আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার চারজন হলেন- শিশুটির বোন জামাই সজিব (১৮), বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৪২), বোন জামাইয়ের বড় ভাই রাতুল (২০) এবং বোনের শাশুড়ি জাহেদা (৪৫)।
মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর ধর্ষণে সহযোগিতা এবং পরবর্তী সময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে শিশুটির বোন জামাই সজিব, সজিবের বড় ভাই রাতুল এবং বোনের শাশুড়ি জাহেদার বিরুদ্ধে।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১ মার্চ ৮ বছরের শিশুটি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রাম থেকে বড় বোনের বাড়ি শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বেড়াতে যায়। ৫ মার্চ রাতে বোনের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে সে। কিন্তু রাত দেড়টার দিকে বোন জামাই সজিব ঘরের দরজা খুলে দিলে শ্বশুর হিটু শেখ ঘরে ঢোকেন। ঘুমন্ত শিশুটির মুখ চেপে ধরে পাশের কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন টিটু। রাত আড়াইটার দিকে ঘুম ভেঙে গেলে শিশুটিকে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন তার বোন। তখন না বুঝলেও সকালে ধর্ষণের বিষয়টি বুঝতে পারেন বোন।
এ অবস্থায় বিষয়টি কাউকে না জানাতে হিটু শেখের ঘরে শিশুটি ও তার বোনকে আটকে রাখা হয়। পরে জোহরা নামে এক প্রতিবেশি বিষয়টি জানতে পেরে শিশুটিকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তবে ধর্ষণের শিকার শিশুটির অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় ২৫০ শয্যা হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক শিরিন সুলতানা দুপুরেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মাগুরা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা জানান, শিশুটির চিকিৎসার কারণে পরিবারের সবাই ঢাকায় অবস্থান করায় মামলাটি হতে সময় লেগেছে। তারপরও মামলায় অভিযুক্ত সব আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর শিশুটির চাচা ইব্রাহিম শেখ বলেন, আমাদের ছোট মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.