Sharing is caring!

টাইমস নিউজ
শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সমন্বয়ক লাকি আক্তারকে গ্রেফতারের দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
গতকাল রাত সোয়া ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
এর আগে ‘পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী বানানোর অন্যতম খলনায়ক লাকি আক্তারসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদী দোসরদের গ্রেফতারের দাবিতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল’—শীর্ষক কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীরা ‘শাহবাগ নো মোর, ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা, চব্বিশের বাংলায় শাহবাগের ঠাঁই নাই, শাহবাগীরা হামলা করে, ইন্টেরিম কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছে। তারা আবার সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে আর শাহবাগ ফিরবে না। লাকি আক্তাররা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছিল। তারা আজ পুলিশের ওপর হামলা করেছে। এই বাংলাদেশে আমরা আর শাহবাগের উত্থান মেনে নেব না।
তারা আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে যাওয়ার নাম করে তারা আজ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আসার আগে এই মুহূর্তে কারা বাংলাদেশকে বিশৃঙ্খল করতে চায় তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অবিলম্বে যারা আজ পুলিশের ওপর হামলা করেছে, তাদেরসহ লাকি আক্তারকে গ্রেফতার করতে হবে। তাকে গ্রেফতার না করলে আমরা আবার রাজপথে নামবো। ২০১৩ সালে যারা বিচারহীনতা কায়েম করে ফ্যাসিবাদী হাসিনাকে শক্তিশালী করেছিল। এই শাহবাগীদের বিচার করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লাকি আক্তারকে গ্রেফতার করতে হবে। বাংলাদেশে হয় আমজনতা থাকবে না হয় শাহবাগিরা থাকবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, বিকাল সাড়ে ৩টায় ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা নামে নারী-পুরুষসহ ৬০/৭০ জনের একটি বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়।
এসময় পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। নিকটবর্তী স্থানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে উদ্ধত ও মারমুখী আচরণ আরম্ভ করে।
এ সময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন।
এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।