আজ সোমবার, ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্দোলনের সাফল্যের পেছনে ছাত্রলীগের একটি অংশের ভূমিকা ছিল : নাহিদ ইসলাম

editor
প্রকাশিত মার্চ ১৬, ২০২৫, ০৪:৪৯ অপরাহ্ণ
আন্দোলনের সাফল্যের পেছনে ছাত্রলীগের  একটি অংশের ভূমিকা ছিল  : নাহিদ ইসলাম

Sharing is caring!

টাইমস নিউজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাফল্যের পেছনে ছাত্রলীগ থেকে বের হয়ে যাওয়া একটি অংশের ভূমিকা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, “ছাত্রলীগের বিদ্রোহী বা বিপ্লবী অংশটি বিদ্রোহ করেছে, তারা যদি না বের হতো, তাহলে আন্দোলনটা অনেক কঠিন হতো।”

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ‘জুলাই: মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমাদের বেশিরভাগ আন্দোলন নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে ব্যর্থ হয়। কিন্তু এবার সেই জায়গায় আমরা সচেতন ছিলাম। শুরু থেকেই বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে একটি বোঝাপড়া ছিল, যার ফলে তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে লোকবল পাঠিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও অলিখিত সমঝোতা ছিল। বিএনপি প্রথম থেকেই এই আন্দোলনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হিসেবে দেখেছে এবং নৈতিক সমর্থন দিয়েছে, কিন্তু এটাকে নিজেদের আন্দোলন বলে দাবি করেনি।”

তিনি বলেন, “এই আন্দোলনের কর্মসূচি ধাপে ধাপে এগিয়েছে। তিন তারিখে শহীদ মিনারে এক দফার বাইরে অন্য কিছু বলার সুযোগ ছিল না, কারণ জনগণের চাওয়া তখন একটাই ছিল— সরকার পতন। পাঁচ তারিখের গণভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে ছিল না, ছিল ‘লং মার্চ টু ঢাকা’। তবে ঢাকায় এসে জনগণ সিদ্ধান্ত নেয় কী করতে হবে, আমরা কেবল তাদের সঙ্গে থেকেছি।”

নাহিদ বলেন, আন্দোলনকে ‘মনসুন রেভুলেশন’ বলা হলেও প্রকৃতি সহায় ছিল। তিনি বলেন, “বৃষ্টির মৌসুম হলেও এমন বৃষ্টি হয়নি যে মানুষ রাস্তায় নামতে পারবে না। এটা অলৌকিক মনে হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কোনও নির্দিষ্ট নেতৃত্ব নির্ধারণ করবো না। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নজনকে সামনে রাখা হবে। তবে বাস্তবতার কারণে একসময় আমাকে মিডিয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং কর্মসূচি ঘোষণা করতে হয়েছে। কিন্তু অনেক তথ্য থেকে নিজেকে সচেতনভাবেই দূরে রেখেছিলাম, যাতে ধরপাকড়ের ক্ষেত্রে আন্দোলন নিরাপদ থাকে।”

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন নিয়ে তিনি বলেন, “আসিফ খুব জোরালোভাবে বলেছিল, ছাত্রদেরকে সরকারের প্রতিনিধি হতে হবে, যাতে দাবিগুলো বাস্তবায়নের সম্ভাবনা থাকে। আমি তখন কিছুটা দ্বিধায় ছিলাম, কারণ আমাদের জন্য মাঠটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরে তিন বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার সময়ও আসিফ সাহসী ভূমিকা রাখে।”

আন্দোলনের কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, “যখন আমাকে গ্রেফতার করা হয়, তখন তদন্তকারীরা হতাশ হয়ে যায়, কারণ আমার কাছে আন্দোলন সংক্রান্ত অনেক তথ্যই ছিল না। আন্দোলনের সময় বিএনপি বা ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গেও আমার কোনও যোগাযোগ হয়নি। মূল যোগাযোগ করেছিল আসিফ, পরে তাকেও তুলে নেওয়া হয়। তবে মূল লক্ষ্য ছিল আমাকে আটক করা, কারণ আমি দৃশ্যমান ছিলাম।”