টাইমস নিউজ
তিন মাসের বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস, মাতৃত্বকালীন ছুটির টাকা এবং সার্ভিস বেনিফিটসহ সব পাওনা পরিশোধের দাবিতে সচিবালয় ঘেরাও করতে এলে পুলিশের বাধায় পিছু হটে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। তবে এসময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে প্রায় ৪০ জন শ্রমিক ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব ও সচিবালয়ের লিংক রোডের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ায় শেল নিক্ষেপ করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে সচিবালয়ের সামনে থেকে চলে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রমিকরা শ্রম ভবন থেকে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে শ্রম মন্ত্রণালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে আসে এবং জাতীয় প্রেসক্লাব ও সচিবালয়ের মাঝের লিংক রোডে পুলিশের ব্যারিকেড থাকায় বাধার সম্মুখীন হয়। পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ায় শেল নিক্ষেপ করে। এতে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় পুলিশের আক্রমণে আহত হন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দীলিপ রায় সহ কয়েকজন শ্রমিক নেতা । পল্টন মোড়, কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মোড়ে জ্যামের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ সদস্যের আহত হওয়া নিয়ে শাহবাগ থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর সরদার বুলবুল আহমেদ বলেন, শ্রমিকদের হামলায় আমাদের পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তারা রাজারবাগ পুলিশলাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে ফজলে রাব্বি নামে এক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
গার্মেন্টস টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, সচিবালয়ের সামনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে আমাদের ৩০-৩৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছে।
কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দীলিপ রায়কে পুলিশ আটক করলেও পরে তাকে ছেড়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে বামপন্থী নেত্রী মাহমুদা খা বলেন, আজও যখন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লড়াই হয় তখন সামনে দাঁড়ায় বামপন্থী তরুণেরা। শোষণের বিরুদ্ধে, শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি, কর্মপরিবেশ ও অধিকার নিশ্চিত করার লড়াইয়ে তারা রাস্তায় নামে, গলা ফাটায়, এমনকি নির্যাতনের শিকার হয়। এই লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় আজ দিলীপ রায়ও নিপীড়নের শিকার।
অথচ, সমাজের আরেক অংশ ক্ষমতা আর প্রতিপত্তির প্রদর্শনীতে ব্যস্ত। বহর নিয়ে শোডাউন, বিলাসী জীবনের মোহ এই বাস্তবতায় শ্রমিকের অধিকার, শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম যেন উপহাসের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজ সোশ্যাল মিডিয়া, হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড হয় কিছু তথাকথিত ক্ষমতাশালী ও বিত্তবানদের নিয়ে কিন্তু দিলীপ রায়ের মতো সংগ্রামীদের জন্য তেমন কিছু হয় না। অথচ, এরা নিঃস্বার্থভাবে লড়ে যাচ্ছে, যাবে। ইতিহাস সাক্ষী, সমাজের পরিবর্তন এসেছে তাদের হাত ধরেই, এবং ভবিষ্যতেও আসবে।
আজকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে রয়েছেন টিএনজেড অ্যাপারেলস, অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড, রোর ফ্যাশন, স্টাইল ক্রাফট গার্মেন্টস ও ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী।
উল্লেখ্য, গতকাল (২৪ মার্চ) সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রম ভবনের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান নিয়েছিলেন টিএন্ডজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড এবং অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেডের শ্রমিক কর্মচারীরা। সন্ধ্যা ৭টার পরে তারা মূল সড়ক ছেড়ে আশেপাশের রাস্তায় অবস্থান করে। আজকে তৃতীয় দিনের মতো তাদের দাবি আদায়ে সকাল ১০টা থেকে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.