Sharing is caring!

টাইমস নিউজ
গাজীপুরের কামরাঙ্গীচালা এলাকায় ‘হ্যাগ নীট ওয়্যার’ কারখানায় তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করতেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে কাজে গিয়ে তারা দেখতে পান, কারখানার প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে।
কোনও ঘোষণা ছাড়াই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন মালিক। এ অবস্থায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এই কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের এবারের ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। শুধু গাজীপুরের হ্যাগ নীট ওয়্যার কারখানা নয়, গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে গত সাত মাসে অন্তত দেড় শতাধিক কারখানা বন্ধ এবং ছাঁটাইয়ের কারণে চাকরি হারিয়েছেন এমন লক্ষাধিক শ্রমিক। তাদের পরিবারে ঈদের কোনও ছোঁয়া নেই।
পোশাক শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সাত মাসে দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে একের পর এক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে চট্টগ্রামে ৫২টি কারখানা বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়েছে। গত সাত মাসে দেশের প্রধান তিন শিল্প অঞ্চল—গাজীপুর, সাভার ও নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদীতে মোট ৯৫টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে। এ কারণে প্রায় ৬২ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন। বেশির শ্রমিক এখনও তাদের বকেয়া মজুরি ও চাকরির অবসায়ন পরবর্তী সুবিধা (সার্ভিস বেনিফিট) বুঝে পাননি।
শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে গাজীপুরে রয়েছে ৫৪টি, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে ২৩টি এবং সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮টি। এসব কারখানায় মোট ৬১ হাজার ৮৮১ জন শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করতেন। কারখানা বন্ধের ফলে বেকার শ্রমিকরা প্রায়ই বকেয়া পাওনার দাবিতে আন্দোলন করছেন, যা জনদুর্ভোগ তৈরি করছে।
তথ্য বলছে, শুধু গাজীপুরেই অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। সাভার ও আশুলিয়ায় গত সাত মাসে ১৮টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে, যেখানে ১০,১২৭ শ্রমিক বেকার হয়েছেন।
পোশাক মালিকদের সংগঠন ও শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের ৫২টি কারখানাসহ সারা দেশে মোট প্রায় ১৫০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে, ফলে প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অর্ডার কমে যাওয়া, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারছে না।
শ্রমিকদের দাবি, হুট করে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা চরম অর্থ সংকটে পড়েছেন। বেতন-ভাতা পরিশোধ না করেই অনেক মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ময়মনসিংহের ভালুকায় রোর ফ্যাশন কারখানাটি গত ২৪ জানুয়ারি লে-অফ ঘোষণা করা হয়। কারখানার ১,৩৭৬ শ্রমিক জানুয়ারির বেতন ও লে-অফের ক্ষতিপূরণ পাবেন। তবে নভেম্বর-ডিসেম্বরের বেতন-ভাতা বাবদ শ্রমিকদের প্রায় ৭০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। পাওনার দাবিতে শ্রমিকেরা চলতি সপ্তাহে উত্তরায় বিজিএমইএ ভবন অবরোধ করেন।
এদিকে, গাজীপুরের চন্দ্রায় মাহমুদ গ্রুপের দুটি কারখানা গত বছরের শেষ দিকে বন্ধ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করা হয়নি।
গাজীপুরের স্টাইলক্রাফট ও ইয়াং ওয়ান (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকরা বকেয়া পাওনার দাবিতে গত ২৩ মার্চ শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় অসুস্থ হয়ে রাম প্রসাদ সিং (৪০) নামের এক শ্রমিক মারা যান।
গাজীপুরে সবচেয়ে বেশি কারখানা বন্ধ
গাজীপুরে মোট নিবন্ধিত ২,১৭৬টি কারখানার মধ্যে ৫৪টি বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে— টিএমএস অ্যাপারেলস, নায়াগ্রা টেক্সটাইল, মাহমুদ জিন্স, হার্ডি টু এক্সেল, পলিকন লিমিটেড, অ্যাপারেল প্লাস ও দি ডেল্টা নিট। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর ও সারাবোতে অবস্থিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৪টি ইউনিট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির ৩৩ হাজার ২৪৪ জন শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।
চট্টগ্রামে বন্ধ ৫২ পোশাক কারখানা
চট্টগ্রামে গত ছয় মাসে অন্তত ৫২টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি, কাজের আদেশ (অর্ডার) কমে গেছে প্রায় ২৫ শতাংশ, ফলে কর্মসংস্থান হারিয়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক।
শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ নিয়ে সংকটে রয়েছে অন্তত ৪৪টি পোশাক কারখানা।
বিজিএমইএ সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে নিবন্ধিত পোশাক কারখানার সংখ্যা ৬১১টি, যার মধ্যে বর্তমানে চালু রয়েছে ৩৫০টি। দীর্ঘদিন ধরে ২৬১টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। চালু থাকা ৩৫০টি কারখানার মধ্যে ১৮০টি বিদেশি ক্রেতাদের অর্ডারে কাজ করছে, বাকিগুলো সাব-কন্ট্রাক্টে চললেও অনেকের কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়েছে। শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএসহ বিভিন্ন সংস্থার আওতাভুক্ত পোশাক কারখানার সংখ্যা ৫৮০টি। এর মধ্যে ৫২৮টি চালু থাকলেও কাজের সংকটে গত ছয় মাসে বন্ধ হয়ে গেছে ৫২টি কারখানা।
নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও মন্সীগঞ্জে বন্ধ ২৩ কারখানা
নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জ অঞ্চলে প্রায় ২ হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে গত সাত মাসে ২৩টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে। এতে প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন।
শিল্প পুলিশ-৪ এর তথ্যমতে, সম্প্রতি এই তিন জেলায় বন্ধ হওয়া কিছু কারখানা হলো— গ্রিন বাংলা হোম টেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এশিয়ান ফ্যালকন গার্মেন্টস, জিএল ফ্যাশন, মাস্টার টেক্সটাইল, স্টার কাটিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়েস্ট বেস্ট অ্যাটায়ার্স ইত্যাদি। এসব প্রতিষ্ঠান ছোট ও মাঝারি আকারের এবং মূলত অর্থনৈতিক চাপে পড়েই তারা বন্ধ হয়েছে।
সাভার-আশুলিয়ায় বেকার ১০ হাজার শ্রমিক
সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই শিল্প এলাকায় ১,৮৬৩টি কারখানার মধ্যে ৭৪৫টি পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে। এতে ১০,১২৭ জন শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন।
শিল্প পুলিশ-১-এর তথ্যমতে, এ এলাকায় সম্প্রতি বন্ধ হওয়া কিছু কারখানা হলো—জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, বেস্ট ওয়ান সোয়েটার, এমএস সোয়েটার, সাভার স্পোর্টসওয়্যার, বার্ডা গ্রুপ, র্যামস ফ্যাশন, প্রিয়াঙ্কা ফ্যাশন ও জাভান টেক্স নিটওয়্যার।
আশুলিয়ার ইয়ারপুরের ধনাইদ এলাকায় অবস্থিত জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন গত আগস্টে বন্ধ হয়। এতে সাড়ে চার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যান।
চাকরি হারানো শ্রমিকদের সংখ্যা কত
ট্রেড ইউনিয়নগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আর্থিক সংকটের কারণে গত সাড়ে সাত মাসে ১ লাখের বেশি শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের। নতুন কাজের অভাবে অনেকেই ঢাকায় টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। স্থায়ী আয় না থাকায় ঈদের খরচ মেটানো তো দূরের কথা, পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ চালানোও তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারকে বেকার শ্রমিকদের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে, তাদের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিল ব্যবহার করে বেকারত্ব বিমা স্কিম তৈরি করা যেতে পারে, যাতে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা এই ধাক্কা সামলাতে পারেন।’
শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, চাকরি হারানো শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। শ্রমিকনেতা বাবুল আক্তার বলেন, ‘সরকার যদি বেক্সিমকোর শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে অন্য কারখানার শ্রমিকদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এজন্য দ্রুত একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন করা দরকার।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বন্ধ হওয়া কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা জোগাড় করতে মালিকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেশিরভাগ শ্রমিক এখনও তাদের পাওনা বুঝে পাননি।’
একটি বন্ধ কারখানার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ৫ আগস্টের পর কয়েক দফায় হামলা ও লুটপাটের শিকার হয়েছি। বাধ্য হয়েই কারখানা বন্ধ করতে হয়েছে।
অবশ্য রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছু পোশাক কারখানা বন্ধ হলেও রফতানি আয়ে কোনও হ্রাস হয়নি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত সাত মাসে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হলেও পোশাক রফতানি আয়ে উন্নতি হয়েছে। বিজিএমইএ’র সাবেক একজন পরিচালক বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, বন্ধ হওয়া কারখানার বেশিরভাগ শ্রমিক ইতোমধ্যেই চালু থাকা কারখানায় কর্মসংস্থান পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ছোট কারখানাগুলোর সংখ্যা বেশি হলেও, বড় আকারের কারখানাগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে যদি ২০টি ছোট কারখানা বন্ধ হয়, যেখানে ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন, তবে বন্ধ হওয়া কারখানার শ্রমিকরা চালু থাকা বড় ১০টি কারখানায় চাকরি পেয়েছেন।
এছাড়া, একটি সূত্র জানায়, ছোট ও মাঝারি আকারের কারখানা বন্ধ হলেও পরিবেশবান্ধব ও সবুজ কারখানার সংখ্যা বেড়েছে। তাদের দাবি, গত সাত মাসে যেসব কারখানা বন্ধ হয়েছে, সবুজ কারখানায় উৎপাদন তার চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
যেসব কারণে বন্ধ হচ্ছে পোশাক কারখানা
দেশের তৈরি পোশাকশিল্পে সংকট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। আর্থিক দুরবস্থা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মালিকদের অনুপস্থিতির কারণে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে শ্রমিকদের বেকার হওয়ার পাশাপাশি তাদের বেতন-বোনাস পাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মালিকানাধীন কারখানাগুলো রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের গ্রেফতারের পর প্রতিষ্ঠানটির ১৪টি টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া, গাজী গ্রুপের পাঁচটি টায়ার কারখানা, বেঙ্গল গ্রুপের তিনটি প্লাস্টিক কারখানাসহ আশুলিয়া, সাভার, জিরাবো ও জিরানির অনেক পোশাক কারখানা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে।
শিল্প-সংশ্লিষ্টদের মতে, কারখানা বন্ধের পেছনে অন্তত তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে—
১. অর্থনৈতিক সংকট ও ক্রয়াদেশের অভাব: বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছে দেশের পোশাক শিল্পে। বড় ক্রেতারা অর্ডার কমিয়ে দেওয়ায় অনেক কারখানাই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে না। নগদ অর্থের সংকটে পড়ায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
২. রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা: সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠায় বেশ কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে এসব ঘটনা বেশি দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলো মেরামত ও পুনরায় চালু করা অনেক মালিকের জন্যই কঠিন হয়ে পড়েছে।
৩. মালিকদের অনুপস্থিতি: রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যবসায়ী আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতির ফলে সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলো কার্যত অচল হয়ে গেছে। মালিকপক্ষ থেকে কার্যকর কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় শ্রমিকদের পাওনাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকেরা তাদের প্রাপ্য আদায়ের দাবিতে আন্দোলনে নামছেন।