আজ শনিবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাকালুকি হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০১:২১ অপরাহ্ণ
হাকালুকি হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন

Sharing is caring!

সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী থেকেঃ

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার বিস্তৃত শস্যভান্ডার খ্যাত দেশের বৃহৎ হাকালুকি হাওরের পাশাপাশি পুরো উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। হাকালুকি হাওর অঞ্চলে কৃষি প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে বোরো ধান কৃষকদের অন্যতম ভরসা। হাকালুকি হাওর পাড়ে বোরো ধান কাটায় বেড়েছে কৃষকদের ব্যস্ততা।

হাওর এলাকা জুড়ে এখন বোরো ধান কাটা ও মাড়াইর কাজ চলছে পুরোদমে। হাকালুকি হাওর পরের কৃষকরা জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বোরো ধানের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। পাহাড়ি ঢল আসার আগেই হাওরের ধান ঘরে উঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আরো এক সপ্তাহ সময় পেলে পুরো হাওরের ধান ঘরে তোলা যাবে।

এদিকে ধানের ফলন ভালো হলেও ধানের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরদারির মাধ্যমে বোরো ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা।

হাওর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাকালুকি হাওরের বুকে ধান আর ধান। যে দিকে দু-চোখ যায় শুধু পাকা ধানের সমাহার। মিষ্টি রোদের হালকা বাতাসে দুল খাচ্ছে কৃষকদের সোনার ফসল। বিস্তৃর্ণ মাঠের সোনালি ফসল কৃষকেরা কাচি হাতেকাঁটতে শুরু করেছেন। তবে অকাল ঢলের ভয়ে কৃষকের মনে অজানা ভয় কাজ করছে। তাইতো কাল বিলম্ব না করে ধান কাঁটা ও মাড়াইয়ের পর শুকানো, সেই সাথে তা ঘরে উঠাতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শ্রমিকদের পাশাপাশি কৃষকরা কম্বাইন হারভেষ্টার ব্যবহার করে অতি সহজেই ধান কাটছে।

হাওরপাড়ের কৃষক‌রা জানিয়েছেন, আরও অন্তত এক সপ্তাহ সময় পেলে হাওরের পুরো ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে যাবে। এদিকে ধান কাটা শুরু হলেও ধানের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে সবাই চিন্তিত ও হতাশায় রয়েছেন। রাতদিন পরিশ্রম করে ধানের আবাদ করতে হয়। ধান লাগানোর পর নিয়মিত পরিচর্যাও করতে হয়। তেল-সারের দাম বৃদ্ধিতে গতবারের চেয়ে এবছর খরচটা বেশি হচ্ছে। ন্যায্য দাম না পেলে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই সরকারের কাছে বোরো ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার আহ্বান জানান কৃষকরা।

জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকদের পরিচর্যার কারণে নির্ধারিত সময়ে জমির ধান পাকতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত ৫০/৬০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে এবার প্রায় ছয় টন ধান উৎপাদিত হবে।

জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল আলম খান বলেন, বোরো ধান চাষে কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইতিমধ্যে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। উন্নত কৃষি যন্ত্র ব্যবহারের ফলে কৃষকরা সহজেই ধান ঘরে তুলতে পারছে। চলতি মৌসুমে বোরো ধানের ভালো ফলনের ফলে মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ভালো হবে।