জাফর ইকবাল মৌলভীবাজার থেকে,
মৌলভীবাজার কামালপুর ইউনিয়নের পৈলবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৮ লাখ টাকা কাজে অনিয়মে অভিযোগ উঠেছে। কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে এলজিডি কর্মকর্তারা জড়িত বলে এলাকার সচেতন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
এব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ সহ এলাকার সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকট লিখিত অভিযোগ করলেও নেওয়া হয়নি কোন কার্যকারী পদক্ষেপ। জানাযায়, পৈলবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজের জন্য ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮ সালে টেন্ডার করে মৌলভীবাজার এলজিডি। টেন্ডারে সন্দীপ নামের একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার পর ২২ সালে রব্বান মিয়া নামের একজন সাব- ঠিকাদার কাজ শুরু করেন। কাজের শুরু থেকে অনিয়ম হচ্ছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ সহ এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদের তোয়াক্কা না করে কাজ চালিয়ে যায় ঠিকাদার রব্বান মিয়া।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর তোলা ছবিতে দেখা যায় ড্রইং মোতাবেক বিল্ডিংএ গ্রেড ভিম না দিয়ে মাটি ভরাট করে কাঁদা মাটির উপর লিন্ডার দেওয়া হয়েছে। ছাদে রডে হুক না দিয়ে এবং রেম রড় ছাড়াই ঢালাই করা হয়েছে। পড়ে এলাকাবাসী ও স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতিবাদে আবার ভেংঙ্গে করা হয়। লুভারের নীচে বক্স না দিয়ে ২০"/২০" গাথনী করা হয়েছে। গ্রেড ভিমে ড্রইং মোতাবেক গ্রীল করে রড ঢোকানো কাজের ড্রইংএ থাকলেও ৮"/৬" কেটে লিন্ডারে ঢালাই দেওয়া হয়। সিভিং ছাড়া করা হচ্ছে আস্তর। দেওয়াল আস্তরে প্রমশনে গড় মিলেরও অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষ সহ সচেতন এলাকাবাসীর।
এব্যাপারে স্কুলের কাজের মালামাল দেখাশোনা করার দায়ীত্বে থাকা কামাল খাঁন বলেন, পৈলবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঠিকাদার সন্দীপ বাবুর সাব- ঠিকাদার রব্বান মিয়া ছিলেন। অর্ধেক কাজ করে সে কাজ ফেলে চলে যায়।
কাজের প্রথম থেকে আওয়ামীলীগের দাপট দেখিয়ে সাব- ঠিকাদার রব্বান মিয়া কাজের ড্রইং মোতাবেক কাজ না করে তার ইচ্ছে মতো কাজ চালিয়ে যায়। তখন এলজিডির ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর( বর্তমানে বদলী) কাজ দেখা শোনা করতেন। তাকে ম্যানেজ করে কাজে ইচ্ছে মতো অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে ঠিকাদার। বেশী ভাগ কাজ ড্রইং মতো হয়নি। পরে শহীদ মিয়া নামের অন্য সাব- ঠিকাদার কাজ শুরু করেন।
এব্যাপারে পৈলবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবলী সেন বলেন, ২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী আমরা মিছরাহুল রহমান রিপনের ৩ রোমের একটি বাড়িতে খু্ব কষ্টে স্কুল চালাচ্ছি।
প্রথম থেকে স্কুলের কাজে অনিয়ম হচ্ছে জেনে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করেছি। এখনো এলাকার সচেতন মহল থেকে জানতে পেরেছি কাজে অনিয়ম চলছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগের কি ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন জানিনা।
স্কুলের কাজের ঠিকাদার রব্বান মিয়া বলেন, আমি কাজ ফেলে যাইনি। আমি এখনো শহীদ মিয়ার সাথে ঠিকদারীতে শেয়ারে কাজ করছি। কাজের অনিয়মের বিষয়ে দম্ভ করে বলেন, স্কুলের কাজ আমাদের মতো করেছি। যদি ড্রইং মতো না হয় তা হলে ভেংঙ্গে করে দেবো। অসুবিধা কোথায়?
ঠিকাদার শহীদ মিয়া বক্স না করা ও গ্রেড ভিমে ডিল করে রড় প্রবেশ না করার বিষয় স্বীকার করে এর বিপরীতে যুক্তি তুলে ধরেন। আর এ বিষয় এলজিডির ইঞ্জিনিয়ারের সম্মতি ছিল বলে জানান। বাকী কাজ সঠিক ভাবে হয়েছে বলে দাবী করেন।
পৈলবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে দায়ীত্বে থাকা সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মিল বলেন, স্কুলের কাজ ড্রইং মোতাবেক হচ্ছে। আমি খুব গুরুত্ব সহকারে স্কুলের কাজটি দেখছি। শুক্রবার ছুটির দিনও স্কুলের কাজ পরিদর্শনে গিয়েছি। এছাড়া কাজ এখনো শেষ হয়নি। অনিয়মের প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলজিডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ আব্দুল্লাহ বলেন, স্কুলের কাজ সঠিক ভাবে হচ্ছে। কোন অনিয়ম হচ্ছে বলে কোন অভিযোগ পাইনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে বলেন, আমি অভিযোগ এখনো পাইনি। আর প্রধান শিক্ষক কাজের ড্রইং কি বুঝেন? উনাকে আমার নিকট নিয়ে আসেন। আমাকে ড্রইংটা বুঝিয়ে দিতে।
ড্রইং বুঝিয়ে দেওয়ার দায়ীত্ব স্কুলের প্রধান শিক্ষকের? আর এটা কি প্রধান শিক্ষকের চাকুরী জানতে চাইলে প্রশ্নটি এরিয়ে যান। কাজ ড্রইং মতো হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে কোন উত্তর দেননি।
মৌলভীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তাজ উদ্দিন বলেন, পৈলবাগ স্কুলের কাজের অনিয়মের বিষয় অভিযোগ পেয়েছি। আমি ঠিকাদারকে ডেকে এনে সতর্ক করেছি। আর অভিযোগটি তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এলজিডির নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট পাঠিয়েছি
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.