প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ৮:০৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ২, ২০২৪, ৪:০৬ অপরাহ্ণ
এম এ মান্নান,নাগরপুর(টাঙ্গাইল)সংবাদদাতা:
মাছে-ভাতে বাঙালি খেতাব পাওয়া এদেশের গ্রাম-বাংলার প্রতিটি মানুষের শৈশবকালের একটি পরিচিত নাম ‘ছিপ-বড়শি।গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত এ ছয় ঋতুর আবর্তন বাংলাদেশকে বৈচিত্যময় করে তোলে। এখন চলছে শীতকাল। বর্ষা মৌসুম শেষে নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যায়। আর এ সময় মাছ ধরতে ব্যস্ত হয়ে পরে সৌখিন ও অলস সময় পার করা নদী ও মাছের সাথে সম্পর্ক রয়েছে যাদের।
রবিবার (০১ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার দুয়াজানী এলাকায় নোয়াই নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে ৩০ বছরের জাহাঙ্গীর আলমসহ আরো কয়েক জন মৎস্য শিকারীর। বড়শি দিয়ে মাছ ধরা শিকারীগনের সাথে কথা বললে তারা জানান, বর্ষার পানি চলে যাওয়ায় নদীতে এখন পানি অল্প। আর নদীও হারিয়েছে তার যৌবন। তাই সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত আমরা নদীর মধ্যে ছিপ বড়শি ফেলে মাছ ধরি। এখন মাছ ধরার কাজে অনেকটাই ব্যস্ত। ছিপ দিয়ে মাছ শিকার করা অনেক ধৈর্যের কাজ। তবু জীবণ ও জীবিকার তাগিদে আমরা মাছ শিকার করে থাকি।
তারা আরও বলেন, আগে এক সময় নদীতে বড়শি দিয়ে পুঁটি, টেংরা, বাইন, চ্যাঙ, শোল, বেলে, পাবদা, কৈ, মাগুর, বোয়াল এসব মাছ পাওয়া যেত কিন্তুু এসব মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এ মাছ এখন আর তেমন চোখে পরে না। দিন শেষে যে মাছ পাই তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পাই সে টাকা দিয়ে সংসার চালাতে হয়।
বাঙালিকে বলা হয় “মাছে ভাতে বাঙালী” তাই প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালীরা কেউ শখের বসে কেউবা আবার বাণিজ্যিভাবে পেশাগত কারণেও মাছ ধরাতে আনন্দ পেয়ে থাকেন। এই মাছ ধরতে খাল, বিল, নদ-নদী, মুক্ত জলাশয় এমনকী সাগরেও চলে যায় অনেকে। তবে শখের বসে মাছ ধরাতেই আনন্দ পেয়ে থাকেন অনেকে।
ছোট বালক আহাদ সেখ বলেন, ছোটবেলা থেকেই শখের বশে নিজে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করি। মাছ ধরতে আমার অনেক ভাল লাগে।
উপজেলার দুয়াজানী এলাকা থেকে আসা এক মাছ শিকারী জানান, বড়শিতে মাছ ধরা তার শখ। আর এই শখ এখন তার নেশায় পরিণত হয়েছে। ছিপে মাছ ধরতে তার খুব ভাল লাগে। তাই প্রতিদিন বিকেল হলেই তিনি দুই-তিনটা হুইল বড়শি নিয়ে চলে আসেন নোয়াই নদীতে।
মাছ শিকারী ও স্কুল শিক্ষক সুজন কুমার হালদার বলেন-নদীতে সময় ভেদে বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যায়-সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আইড়, বোয়াল, কালি বাউস, বাইম, বাঘা আইড়, পাঙ্গাশ। ছোট মাছের মধ্যে বাঁশপাতা, বাতাসি, বাঁচা, টেংরা, গুলসা, চিংড়ি এবং আরো বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।নদীতে মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যাবহার করা হয়- যেমন পিঁপড়ার ডিম, পঁচা মাছ, কেঁচো, মুরগির বিভিন্ন অংশ দিয়ে মাছ ধরা হয়।
এবিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ জানান, নদীতে বা উন্মুক্ত জায়গায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরা আইনগত কোন বাধা নেই।বড়শি দিয়ে মাছ ধরা এটা আমাদের ঐতিহ্যমান দৃশ্য।নাগরপুরে কার্ডধারী জেলে আছে তাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে মৎস্য অফিস থেকে সহযোগিতা করা হয়।