Sharing is caring!
সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী থেকেঃ
মানবজমিন ও জুড়ী টাইমস সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে জুড়ী উপজেলা বিএনপির কর্মী সমাবেশে হট্টগোল এবং অনুষ্ঠানে অংশ না নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের ফিরে যাওয়ার বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির মৌলভীবাজার জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় উপজেলা বিএনপি’র আয়োজনে জুড়ী শহরের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
গত ১৫ ডিসেম্বর রবিবার বিকেলে জুড়ী সরকারি কলেজ মাঠে জুড়ী উপজেলা বিএনপির আয়োজনে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ব্যানারে নামের বিষয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে জুড়ী উপজেলা শহরে উপস্থিত হয়েও সমাবেশ স্থলে যাননি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান। অন্যদিকে, সমাবেশ স্থলে জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু ও জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক উপদেষ্টা শরিফুল হক সাজুর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় হট্টগোল হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ প্রচার করেন। এ নিয়ে ১৬ ডিসেম্বর মানবজমিনে ‘জুড়ী বিএনপির কর্মী সমাবেশে হট্টগোল, ফিরে যান গউছ-নাসের রহমান’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়া স্থানীয় জুড়ী টাইমস সহ জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এসব সংবাদের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ দল। আপনারা অবগত আছেন গত ১৫ তারিখে জুড়ী উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিরাট কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মীসভায় আমাদের মৌলভীবাজার জেলার নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। আমরা জাতীয়তাবাদী দল সারা বাংলাদেশে দলকে পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে কর্মীসভার মাধ্যমে উপজেলায় উপজেলায় ইউনিয়নে ইউনিয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি সারা বাংলাদেশ ব্যাপি। তারই অংশ হিসাবে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় ১৫ ডিসেম্বর আমাদের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। অত্যন্ত সুশৃংখল ও সুন্দর মনোরম পরিবেশে আমাদের এই কর্মী সভার আয়োজন ছিল। সমাপ্তিও একইভাবে হয়েছে। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে আপনাদেরকে জানাচ্ছি যে, কিছু কিছু পত্রিকা বিশেষ করে মানবজমিন এবং জুড়ী টাইমসে আমাদের নিউজগুলোকে আমরা মনে করি একটু বিকৃত করে কিছু রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য এই নিউজগুলা করা হয়েছে। আপনারা সকলে জানেন যে, দেশে এখন আওয়ামী লীগের কোন মানুষ নাই, আওয়ামী লীগ সরকারে নাই, আগামী দিনে নির্বাচন আসছে, এই নির্বাচনটা আরো অন্যান্য দলের ভিতরে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে। এই বিষয়টা আমি একটু ইঙ্গিত পূর্বকভাবে আপনাদেরকে অবগত করতে চাই, এই নিউজটাই একটা রাজনৈতিক দলের কোন কর্মী কোন পত্রিকার সুনাম নষ্ট করার জন্য আমার কাছে মনে হয়েছে এই ধরনের একটি বিকৃত বানোয়াট নিউজটা করা হয়েছে। আমরা বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই পত্রিকায় যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দফায় দফায় হট্টগোল হয়েছে, এটা মোটেই এ ধরনের কোন ঘটনা আমাদের এই সভায় ওইদিন ঘটে নাই। আপনারা জানেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কত বড় একটি সংগঠন, বাংলাদেশের সবচাইতে গণতান্ত্রিক মানুষের দল। এই দলের কর্মীসভায় হাজার হাজার লোক উপস্থিত ছিল। এখানে প্রতিযোগিতামূলক কিছু কিছু ছোট ঘটনা থাকতে পারে, কিন্তু পত্রিকায় যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বারবার গন্ডগোল হয়েছে এমন কোন ঘটনা এখানে ঘটেনি। কোন ব্যক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে আবার কোন ব্যক্তিকে খাটো করে এখানে নিউজ করা হয়েছে। আমরা আবারও তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আপনারা সাংবাদিক ভাইদের কাছে আবেদন করতে চাই, আমরা রাজনৈতিক দলের কর্মী, আপনারা সাংবাদিকতা করেন, আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে দেশ উপকৃত হবে, রাজনৈতিক দলগুলো উপকার পাবে, আমরা সকলে আপনাদের কাছ থেকে উপকার পাব এই ধরনের লেখার আশা করি। কিন্তু এই ধরনের বিকৃত করে যদি সংবাদ প্রকাশ করা হয় তাহলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার বিষয় থাকে। একই উপজেলায় আমরা বসবাস করি, একে অন্যের সাথে আমাদের সৌহার্দ্যতা আছে ভাতৃত্ববোধ রয়েছে, আমরা আগামী দিনে চাই এই ধরনের বিকৃত নিউজ না করে সঠিক নিউজ গুলা আপনারা প্রকাশ করবেন। এটা আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকলো। আমরা রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আপনাদের কাছে সব সময় সহযোগিতা কামনা করছি।
নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু আরো বলেন, সমাবেশে যে ছোট খাটো গঠনাগুলো হয়েছে তা ধরার মতো বিষয় ছিলনা। সিলেটে ওইদিন বিকাল বেলায় আমাদের ম্যাডামের উপদেষ্টা মির্জা আজম সাহেব উপস্থিত হয়েছিলেন এবং সেখানে একটি মিটিং এর আয়োজন ছিল, তাই আমাদের প্রধান অতিথি ও একজন বিশেষ অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও জুড়ীতে মধ্যাহ্নভোজের পরে সেখানে তাদের ডাকা হয়েছে বিধায় চলে যান। মানবজমিন ও জুড়ী টাইমস সহ কিছু গণমাধ্যমে বিকৃতভাবে সংবাদটি প্রচার করা হয়েছে।’
বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু বলেন, আমরা স্বচক্ষে দেখেছি আমাদের কর্মীসভায় আওয়ামী লীগের কিছু চক্রান্তকারী মানুষ উপস্থিত ছিল, তারা বিভিন্ন বিষয়ে বিভ্রান্ত ছড়িয়েছে বলে আমি মনে করছি। আমাদের দলের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার জন্য তারা বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছেন। আমাদের জুড়ী উপজেলা বিএনপির মধ্যে শতভাগ ঐক্য রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাছুম রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আছকর প্রমুখ।