তাপস দাশ শ্রীমঙ্গল:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে “জ্ঞান-বিজ্ঞানে করবো জয়, সেরা হবো বিশ্বময়”—এই প্রতিপাদ্য-কে সামনে রেখে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ, বিজ্ঞান মেলা এবং ৯ম জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ২০২৫-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) উপজেলার কলেজ রোডস্থ উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন এর উপস্থিততে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিলিপ কুমার বর্ধন, উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কবিতা রানী দাশ। আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানভিত্তিক প্রকল্প ও উদ্ভাবনী ধারণা প্রদর্শন করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং পরিবেশ সুরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
বিজ্ঞান মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেন, এই মেলা তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি বিকাশে অনুপ্রাণিত করেছে। বিজ্ঞান মেলা কেবল প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নয়, বরং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিজ্ঞানচর্চা ও উদ্ভাবনী মনোভাব তৈরির একটি কার্যকর মাধ্যম। এমন আয়োজন আমাদের দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
বিজ্ঞান মেলা ঘুরে দেখতে আসা প্রভাষক জলি পাল বলেন, "আমাদের ছোটবেলা এমন মেলা দেখার সুযোগ আমাদের প্রজন্মের হয়ে উঠেনি, আমরা করতে পারি নি। এখনকার শিক্ষার্থীরা এই সুযোগটা পাচ্ছে। এমন আয়োজন বারবার হওয়া প্রয়োজন। বছরে যদি দুই-তিনবার হতো আরও ভালো হতো। এটা খুবই প্রয়োজনীয় এই জন্য যে, শিক্ষার্থীদের কোনো প্রজেক্ট যদি আমরা সাধারণ মানুষের কোনো কাজে আসে। আমাদের দেশে গ্রামে গঞ্জে এখনো অনেক মানুষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় যদি এমন বিজ্ঞান মেলার ঘনঘন আয়োজন করা হয় তাহলে আমাদের ছেলেমেয়েরা মোবাইলের আসক্তি থেকে বেরিয়ে এসে একটা সৃজনশীল জগতে প্রবেশের সুযোগ পাবে। এই বিজ্ঞান চর্চার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।"
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি বলেন, “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্বে নিজেদের প্রতিভার প্রমাণ দিতে পারবে। এই ধরনের আয়োজন নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিজ্ঞানচর্চার আগ্রহ সৃষ্টির পাশাপাশি ভবিষ্যৎ উদ্ভাবকদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।"
সমাপনী অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।