তাপস দাশ শ্রীমঙ্গল:
বিদ্যার জ্যোতিতে আলোকিত শ্রীমঙ্গল শহর, ঢাক-ঢোলের উচ্ছ্বাস আর শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় আয়োজন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শ্রীমঙ্গল সার্বজনীন দুর্গাবাড়ির সামনে বিভিন্ন পূজামণ্ডপের সরস্বতী প্রতিমা একত্রিত হয়ে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শুভ্রবসনা বিদ্যার দেবীকে কেন্দ্র করে এই শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে, যেখানে ভক্তদের উচ্ছ্বাস আর সনাতন ঐতিহ্যের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য মুগ্ধ করে পথচারীদের। পরে, শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রতিমাগুলো নিজ নিজ সুবিধাজনক স্থানে বিসর্জন দেওয়া হয়।
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুনিল বৈদ্য শচী, পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ দাশ চৌধুরী ছোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নৃপেষ ঘোষ, এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক গৌতম পুরকায়স্থ। তাদের উপস্থিতি এ উৎসবকে আরও শোভামণ্ডিত করে তোলে।
প্রতি বছর মাঘের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্রীমঙ্গল মুখরিত হয় শ্বেতশুভ্র বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনায়। জ্ঞান, সংগীত ও সৃজনশীলতার এই দেবীর চরণে শিক্ষার্থীরা কলম-খাতা অর্ঘ্য দিয়ে প্রজ্ঞার আলো নিবেদন করে। পূজার্চনার পর বিদায়ের আবেগে ভেসে যায় ভক্তদের হৃদয়।
শ্রীমঙ্গল পূজা উদযাপন পরিষদের পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ দাশ চৌধুরী ছোটন বলেন, "শান্তিপূর্ণভাবে সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমাদের একটিই প্রার্থনা— বিদ্যা ও শুভবুদ্ধির আলোয় ভরে উঠুক পৃথিবী, দূর হোক অজ্ঞতার অন্ধকার।"
শোভাযাত্রার বর্ণিলতা, শঙ্খধ্বনি আর ভক্তদের উচ্ছ্বাসে আজ মুখরিত ছিল গোটা শহর। এই উৎসব শুধুমাত্র এক দিনের নয়, এটি জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা, সংস্কৃতি ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। পরের বছর আবারও দেবী আসবেন, আবারও বইবে জ্ঞানের শুদ্ধ বাতাস— এ প্রত্যাশায় শেষ হলো এবারের সরস্বতী পূজার মহোৎসব।