Sharing is caring!

সিলেট ডেস্ক:
সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, কমিউনিটি রিফিলিং কার্যক্রমের মাধ্যমে নিবন্ধিত রোগীদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি সিলেট স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। উপজেলা হাসপাতালের পাশাপাশি কমিউনিটির মানুষ যাতে নিয়মিত ওষুধগ্রহণ এবং সুস্থ জীবন আচরণ বজায় রাখতে পারে, সে ব্যাপারেও উদ্যোগী ও বাস্তব কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, আজ একটি ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যেখানে সেবা দাতা এবং সেবা গ্রহীতা উভয়য়ের উপস্থিতিতে মতবিনিময় আয়োজন করা হয় এবং এই বিষয়টি প্রশংসনীয়।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিভিল সার্জন অফিস, সিলেট-এর আয়োজনে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের সেবাগ্রহণের অভিজ্ঞতা এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সুস্থ জীবনাচরণ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. আনিসুর রহমান উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরীর সভাপতিত্বে বর্তমান কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের রিফিলিং কার্যক্রম প্রক্রিয়া সফল ও বেগবান করার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সিলেট সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর ‘বাংলাদেশ হাইপার টেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ’ প্রোগ্রামের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় রিসোর্স পারসন হিসেবে বক্তব্য রাখেন ‘বাংলাদেশ হাইপার টেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ’র সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া (অব.), এডিশনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া।
প্যাশেন্ট ভয়েস প্রোগ্রাম বিষয়ক বক্তব্য রাখেন ডেপুটি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ডা. শামীম জুবায়ের। রিফিলিং কার্যক্রমের আপডেট নিয়ে বক্তব্য রাখেন সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার ডা. দেবদুলাল দে পরাগ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. আহমদ সিরাজুম মুনির, ডা. মো. দেলওয়ার হোসেন সুমন ও উপস্থিত সাংবাদিক বৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিএইচসিআই-এর ডিভিশনাল প্রোগ্রাম অফিসার সাজ্জাদ হোসাইন। এছাড়াও এসময় সিলেটের সবক’টি উপজেলার স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা এবং ১৯ জন সিএইচসিপি উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের সেবাগ্রহণের অভিজ্ঞতা বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, ‘বাংলাদেশ হাইপার টেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ’ প্রোগ্রামের আওতায় প্রায় ২০ জন রোগীর অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। কমিউনিটি পর্যায়ে এই কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করতে সবকয়েটি উপজেলার হাসপাতাল প্রাঙ্গণে রোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়েজন করা হয়েছে। এসব মতবিনিময়ের মাধ্যমে রোগীদের চাহিদা, অভিজ্ঞতা এবং স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সমস্যা সরাসরি তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রোগ্রামের অধীনে সিলেট জেলায় ২০২১ সাল থেকে কমিউনিটি পর্যায়ে বিভিন্ন ধাপে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। মতবিনিময় সভায় সেই সকল রোগীদের উপস্থিত করা হয়েছে যারা নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করেন এবং কমিউনিটি পর্যায়ে এই কার্যক্রমের সুফল ভোগ করছেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতা সিলেট জেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার কর্ণধারদের কাছে তুলে ধরেন, যা ভবিষ্যতে এ কার্যক্রমকে আরও বেগবান করে তুলবে। এ ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সিভিল সার্জন অফিস এবং ‘বাংলাদেশ হাইপার টেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ’-এর কর্মকর্তাবৃন্দ।
এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক কর্মসূচী এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও রিসল্ভ টু সেইভ লাইফ ইউএসএ এর সহযোগিতায় গত প্রায় ৬ বছর পূর্বে সিলেটের বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলা থেকে এর কার্যক্রম শুরু হয়ে আজ সিলেট বিভাগের সবক’টি উপজেলা সহ দেশের ১৮৪টি উপজেলায় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে সিলেট জেলায় উচ্চ রক্তচাপ রোগীর সংখ্যা ৭৩,১২৫ জন এবং ডায়াবেটিস রোগী ৪৩,৮৯৯ জন রয়েছেন। তার পাশাপাশি এই জেলায় স্ক্রিনিং রোগীর সংখ্যা ৮,৪১,৩৭০ জন। সম্প্রতি তা ৩১০টি উপজেলায় উর্ত্তীর্ন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় হেলথ কমপ্লেক্সে এনসিডি কর্নারে রোগীদের বিনামূল্যে উচ্চরক্তচাপ এবং ডায়েবেটিসের ওষুধ প্রতি মাসের জন্য দেয়া হয়ে থাকে।