মোঃ ওবায়দুল হক মিলন, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
কৃষক নেতা আজাদ মিয়া হত্যাকান্ডের ৬ বছর পার হলেও এখনো সুষ্ঠুভাবে মামলার তদন্ত শেষ হয়নি বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবার। গেলো ৬ বছরে দুই দফা তদন্ত হলেও কি এক অদৃশ্য কারণে প্রতিবারই ঘটনার মূল হোতারা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
প্রথম দফায় সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ এবং পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেষ্টিগেশন, সিলেট (পিভিআই) মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায়। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সনজুর মোর্শেদ শাহিন মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামী নুরুল হক এবং উকিল আলীর নাম বাদ দিয়ে অপর ৩জনকে আসামী করে কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পরবর্তীতে পিভিআই র তদন্ত প্রতিবেদনেও এজাহারভুক্ত আসামী নুরুলহক এবং উকিল আলীর নাম না থাকায় ন্যায় বিচার নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন বাদীপক্ষ।
নুরুলহক এবং উকিল আলী এই হত্যাকান্ডের প্রকৃত মাষ্টার মাইন্ড উল্লেখ করে মামলার বাদী নিহতের বড় ভাই আজিজ মিয়া বলেন- এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এবং এরা দুজন হচ্ছে এই হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী।
আমরা সব ধরনের তথ্য প্রমাণ পুলিশ এবং পিভিআইকে দিয়েছি। তারপরও কি কারণে কোন অদৃশ্য ইশারায় এদের দুজনকে আসামী থেকে বাদ দয়া হয়েছে আমরা জানিনা। তবে এটা জানতাম যে আসামীরা খুবই অসৎ দূর্নীতিবাজ এবং প্রভাবশালী। তখনকার ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের উচ্চপদস্থ কয়েকজন দূর্নীতিবাজ রাজনৈতিক এবং আমলা আসামীপক্ষের নিকট আত্মীয় বিধায় মামলার তদন্তে তাদের প্রভাব থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
৫ আগষ্টের পর দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে আজিজ মিয়া বলেন- অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই দূর্নীতিবাজ রাজনৈতিক এবং আমলারাও গা ঢাকা দিয়েছে। কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এবার মালাটির অধিকতর তদন্ত হলে আমরা ন্যায় বিচার পাবো আশা করছি।
উল্লেখ্য ২০১৯ সালের ১৪ই মার্চ দিবাগত রাত দশটার দিকে বাসায় ফেরার পথে সুনামগঞ্জ পুরান বাসষ্ট্যান্ড পিটিআই স্কুলের সামনে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলার শিকার হন হাওর বাচাও আনৈদোলন নেতা আজাদ মিয়া। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে প্রেরণ করেন। সেখানে ৩ দিন চিকিধসার পর ১৭ মার্চ তিনি মারা যান।
পরের দিন ১৮ মার্চ নিহতের বড় ভাই আজিজ মিয়া বাদী হয়ে নুরুল হক উকিল আলী পাভেল আহমদ এবং রিপন মিয়া এই চার জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশের অপেক্ষায়।